নন্দন দত্ত, সিউড়ি: দরিদ্রদের জন্য 'বাংলার বাড়ি' নামে আবাস যোজনা প্রকল্পের সুবিধা দেয় রাজ্য সরকার। চলতি বছরের মধ্যেই সেই প্রকল্পের টাকা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে সুবিধাভোগীদের অ্যাকাউন্টে। অথচ সেই টাকাতেও কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। অনেক জায়গাতেই প্রকল্পের টাকা পাওয়ামাত্রই তাঁদের কাছ থেকে 'কাটমানি' দাবি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তৃণমূল শিবিরের অনেকের বিরুদ্ধেই। তা রুখতে এবার মাইকে প্রচার শুরু করল বীরভূমের হেতমপুর অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি। রবিবার দিনভর তা নিয়েই প্রচারে ব্যস্ত রইলেন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। বললেন, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে এই প্রচার চলছে। আবাসের টাকা থেকে কেউ ভাগ চাইলে প্রয়োজনে দলীয় কার্যালয়ে অভিযোগ জানানোর কথাও বলা হয়েছে।
দুই কিস্তিতে মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হবে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে। রাজ্যের ৫০ লক্ষের বেশি দরিদ্র মানুষজন এই সুবিধা পাবেন বলে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সরকারি প্রকল্পের এই টাকা সুবিধাভোগীদের অ্যাকাউন্টে ঢোকামাত্রই অভিযোগ উঠেছে, তৃণমূল নেতাদের কেউ কেউ এসে 'কাটমানি' চাইছেন। জোর করা হচ্ছে সরকারি টাকার একটা অংশ তাঁদের দেওয়ার জন্য। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এধরনের অভিযোগ মিলেছে ঢের। তা কানে আসামাত্রই নড়েচড়ে বসেছে শাসকশিবির। আবাসের অর্থের ভাগ কাউকে দেবেন না। জোর করলে বা চাপ দিলে অভিযোগ জানান।
এবার তাঁদের আরও বেশি করে সতর্ক করতে তৃণমূলের তরফে শুরু হল সচেতনতা প্রচার। রবিবার বীরভূমের হেতমপুর এলাকার অঞ্চল তৃণমূলের তরফে প্রচার করা হয় - আবাস যোজনার বাড়ির টাকায় কোনও দালাল, কর্মী বা কোনও অফিসার 'কাটমানি' চাইলে তাঁদের ফাঁদে না পড়ে সরাসরি তৃণমূল পঞ্চায়েত কার্যালয়ে জানানোর জন্য মাইকে করে প্রচার করেন দুবরাজপুর ব্লকের হেতমপুর অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা। তাঁরা হেতমপুর পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে মাইকে করে প্রচার করেন। ঘোষণা করা হয়, এরকম যদি কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিন উপস্থিত ছিলেন হেতমপুর অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি অভিনিবেশ রায়, হেতমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সবুর আলি, গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য শেখ হেরাসতুল্লাহ-সহ অন্যান্য কর্মীরা। এর পালটা দিতে বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহার প্রতিক্রিয়া, ''এসব প্রচার করা মানে চুরিকে সমর্থন করা। নইলে এসব বলা কেন? একটা দল, যারা শাসনক্ষমতায় আছে, তারা বাড়ি বানানোর টাকা দিচ্ছে আবার তাদেরই লোকজন সেই টাকার ভাগ চাইছে। সেই দলকেই বলতে হচ্ছে, কাটমানি থেকে সাবধান হোন। কেউ চাইলে দলীয় দপ্তরে অভিযোগ জানান। এ কেমন ব্যাপার?''