সুনীপা চক্রবর্তী: নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহের পর থেকে বেপাত্তা ঝাড়গ্রামের সেই বাঘ। ট্র্যাক ক্যামেরা পেতে বাঘের টিকির দেখাও মেলেনি। কিন্তু আস্ত একটা বাঘ তো আর উবে যেতে পারে না! তাই আতঙ্ক চেপে বসেছিল স্থানীয় বাসিন্দা মনে। আচমকা যদি হামলা চালায়! তাই পারতপক্ষে রাতে ঘরের বাইরে পা রাখছিলেন না কেউই। অবশেষে আশার কথা শোনালেন ঝাড়গ্রাম বনবিভাগের বনাধিকারি্ক বাসবরাজ হলেইচ্চি। জানালেন, “পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডে পালিয়েছে বাঘ। এমনকী ঘাটশিলায় মিলেছে সেই শার্দুলের পায়ের ছাপও। এলাকার গবাদি পশুর গলায় মিলেছে তার দাঁতের চিহ্ন।” বনাধিকারিকের এই স্বস্তির বানীতে ঘাম দিয়ে যেন জ্বর ছাড়ল ঝাড়গ্রামের বাসিন্দাদের। বলছেন, “যাক বাবা, পাঁচদিন পর আরামে একটু ঘুমতে পারব।”
নতুন বছরের গোড়াতেই ঘুম উড়েছিল ঝাড়গ্রামের বাসিন্দাদের। শীতের দিনে গ্রামে হানা দিয়েছিল এক শার্দুল। বিনপুরের কাঁকো অঞ্চলের লক্ষণপুর গ্রামের চাষের জামিতে প্রথমে বড়-বড় পায়ের ছাপগুলি দেখা গিয়েছিল। তারপর মলাবাতি গ্রামের রাস্তায় মিলেছিল একই ধরনের পায়ের ছাপ। শেষ পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছিল বেলপাহড়ির কুলডিহাতে। এক নয়, একজোড়া বাঘের উপস্থিতি নিয়েও বিতর্ক ছড়িয়েছিল।কিন্তু বনদপ্তর পরিস্কার জানিয়েছিল, পায়ের ছাপগুলি বাঘ বা বাঘিনীর। দ্বিতীয় কোনও বাঘ বা শাবকের উপস্থিতির সম্ভবনা নেই বলে পরিস্কার জানিয়েছিল বনদপ্তর। তাঁরা ইঙ্গিতও দিয়েছিল বাঘ ঝাড়খণ্ডে পাড়ি দিয়েছে। কিন্তু মানতে চাইছিলেন না স্থানীয় বাসিন্দারা। এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে একের পর এক ভিডিও ভাইরাল হচ্ছিল। যাতে বলা হচ্ছিল, বাঘ নাকি ঝাড়গ্রাম এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। আতঙ্কে ভুগছিলেন বাসিন্দারাও। শেষমেশ বনাধিকারিকের মন্তব্যে বুকে বল পেলেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন : গঙ্গাসাগরের ইতিহাসে প্রথম, এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে কলকাতায় পাঠানো হল দুই রোগীকে]
এ প্রসঙ্গে কাঁকো এলাকার লক্ষণপুর গ্রামের সুনীল মুর্মু, ওই গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য রাজিব মুর্মু বলেন, “বনাধিকারিকের কথায় স্বস্তি পেলাম। সামনেই মকর সংক্রান্তি। এলাকার মানুষ আনন্দ করবে। তার আয়োজন করবে। এবার শান্তি মনে তাঁরা এই কাজ করতে পারবে। একই সঙ্গে জঙ্গলেও পাতা কুড়তেও যেতে পারবে।” অবশেষে বনাধিকারিকের অভয়বানীতে ঝাড়গ্রামের বাঘপর্বে ইতি টানলেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
The post ঝাড়খণ্ডে পালিয়েছে ঝাড়গ্রামের সেই বাঘ, বনদপ্তরের কর্তার আশ্বাসে স্বস্তিতে বাসিন্দারা appeared first on Sangbad Pratidin.
