ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: বিক্ষোভ-প্রতিবাদের মাঝেই কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকের চাপে এবার ভরতি প্রক্রিয়া শুরু করল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার রাতে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এই কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই ভাবে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের (Visva-Bharati University) বিভিন্ন বিভাগের ফল প্রকাশও করা হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
লাগাতার ছাত্র বিক্ষোভ, উপাচার্য ঘেরাওকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকদিন ধরেই উত্তাল বিশ্বভারতী। এই অবস্থায় রাজ্য যথাযথ ভূমিকা পালন করেনি, এমন অভিযোগ তুলে বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল বিশ্বভারতী। ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৩৮ পাতার রিট পিটিশন দাখিল করে উচ্চ আদালতে। শুক্রবার তার শুনানিতে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশে গাইডলাইন বেঁধে দেন বিচারপতি। শান্তিনিকেতন থানা ও বিশ্বভারতীর রেজিস্ট্রারকে তাঁর নির্দেশ, উপাচার্যের বাড়ির সামনে এ ধরনের ছাত্র বিক্ষোভ চলবে না। তাঁরও শান্তিপূর্ণভাবে থাকার অধিকার আছে। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা আরও বাড়াতে হবে। ক্যাম্পাসের ৫০ মিটারের মধ্যেও কোনও বিক্ষোভ চলবে না। শান্তিপূর্ণ অবস্থান চলতে পারে, তবে চলবে না মাইক বাজিয়ে স্লোগান দেওয়া। সেই সকল নির্দেশ মেনে শুক্রবারই রাতে উপাচার্যের বাড়ির ৫০ মিটার ছেড়ে ফের অবস্থানে বসেন পড়ুয়ারা।
[আরও পড়ুন: Weather Report: সোমবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা, মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা]
হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ক্যাম্পাস থেকে ৫০ মিটার ছেড়ে জমায়েত করেন পড়ুয়াদের একাংশ। তৈরি করা হয় অস্থায়ী মঞ্চ। নেই মাইকের ব্যবহারও। সেই অবস্থান বিক্ষোভে শামিল বেশ কয়েকজন অধ্যাপকও। আর এবার জানিয়ে দেওয়া হল, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভরতি প্রক্রিয়া শুরু করা হল। আবার এদিনই আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের সমর্থনে বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসের ৫০ মিটারের বাইরে মিছিল বের করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। তবে অবস্থান মঞ্চ পর্যন্ত যাননি তাঁরা।
এদিকে, বিশ্বভারতীতে আন্দোলনকারীদের একহাত নিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। তাঁর অভিযোগ, বিশ্বভারতীতে আসলে অশান্তি করছে বামপন্থীরা। যাদের মদত দিচ্ছে রাজ্যের তৃণমূল সরকার। তাঁর কথায়, “কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের সারা জীবনের সাধনার প্রতীক এই বিশ্বভারতী। কেবল শিক্ষা নয়, এটা আমাদের পরিচিতি। আর তাকেই রাজনীতির বাইরে রাখা হচ্ছে না। যাঁরা সব জায়গা থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে, সেই বামপন্থীরা ওখানে উৎপাত করছে। তাঁদের আবার সমর্থন করছে এখানকার সরকার। কেন্দ্রের দ্বারা পরিচালিত সবকিছুর বিরোধিতা করতে হবে। এটাই লক্ষ্য তৃণমূলের। এই ধরনের রীতি বাংলায় কতদিন চলবে জানি না।” এ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) পালটা, “এ অবিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। দিলীপ ঘোষের মনগড়া কথা।”