রাজা দাস, বালুরঘাট: গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের টানে দলে দলে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা (Migrant Labourers)। করোনা অতিমারীর প্রভাবে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার শ্রমিকরা ঘরে ফিরলে পরবর্তীতে তাঁরা ফের চলে গিয়েছিলেন নিজেদের কর্মস্থলে। এবার আবার ভোটের টানে বদ্ধপরিকর পরিযায়ীরা। প্রয়োজন নেই কোনও সরকারি প্রচারের। প্রতিবারের মতো এবারও ভোটকে উৎসবের মতো করেই দেখছেন এই শ্রমিকরা।
জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুর (South Dinajpur) জেলার ৬ টি বিধানসভার এবার মোট ভোটার সংখ্যা ১২ লক্ষ ৭৪ হাজার ৮৬৬ জন। এই জেলার অন্তত ৩০ হাজার ভোটার মুম্বই, দিল্লি, গুজরাট, হরিয়ানা সহ ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজে যুক্ত। অন্যান্য ব্লক তো বটেই, বালুরঘাট, তপন, কুমারগঞ্জ, গঙ্গারামপুর থেকেই ভিনরাজ্যে গিয়ে কাজ করা শ্রমিকের সংখ্যা বেশি। প্রতি বছর পূজাপার্বণ বা নিজেদের সম্প্রদায়ের কোনও উৎসবে এঁরা না ফিরলেও, ভোট পর্বে কিছুদিনের জন্য ফিরে আসেন ঘরে। মাস খানেক ধরে চলা ভোট প্রক্রিয়াকে তারা নেন উৎসবের আকারে। তবে করোনার (Coronavirus) প্রভাবে ভিনরাজ্যে কাজ করা শ্রমিকদের দুর্দশার কথা সকলের জানা। সেসময় দলে দলে ফিরে আসা শ্রমিকরা মাস কয়েক আগেই ফের কাজে গিয়েছেন ভিন রাজ্যে। স্বাভাবিকভাবেই এই ক’মাসের ব্যবধানে ঘরে ফেরাটা কঠিন ছিল এই শ্রমিকদের। তবুও সমস্ত বাধা বিপত্তিকে দূরে সরিয়ে এবারও নির্বাচন প্রক্রিয়ায় শামিলের ধারা অব্যাহত দক্ষিণ দিনাজপুরে।
[আরও পড়ুন: কারও সঙ্গী গরুর গাড়ি, কেউ চড়ছেন নৌকোয়, অভিনব প্রচারে মাত করলেন দুই তৃণমূল প্রার্থী]
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারী ব্লকের বুনিয়াদপুরের বাসিন্দা বলরাম বর্মন, বালুরঘাটের নেপাল রায় সহ ভিন রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকরা বলেন, ”মুম্বইয়ে শ্রমিকের কাজে নিযুক্ত আমরা। পরিবার নিয়েই থাকি মুম্বইতে (Mumbai)। পূজাপার্বণ থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত কিংবা পুরভোটে বাড়ি ফিরতে তেমন উৎসাহ আসেনা আমাদের। কিন্ত লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটকে উৎসব হিসেবে ধরে নিয়েই ফিরে আসি প্রতিবার। টানা একমাস ভোট প্রক্রিয়ায় শামিল হই এখানে।” আগামী ২৬ এপ্রিল ভোট দক্ষিণ দিনাজপুরে। তার আগেই এবার ঘরে ফেরার পালা। বলরামরা জানাচ্ছেন, ভিনরাজ্যে থাকলেও তাঁদের ভোটের নাম রয়েছে নিজ নিজ বিধানসভা কেন্দ্রে। নিজেদের অধিকার প্রয়োগ করাটা জরুরি ভেবেই হয় ঘরে ফেরা। ভোটদানের পাশাপাশি পরিজনদের সঙ্গে কাটাতে পারেন এই ক’টা দিন। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অঙ্গীকারবদ্ধ থাকা ওই শ্রমিকদের দরকার হয় না কোনও সরকারি প্রচারের।