সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যের চতুর্থ দফা ভোটের সকালেই চাঞ্চল্যকর অডিও ক্লিপ প্রকাশ্যে আনল বিজেপি। যাতে তৃণমূলের ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরকে বলতে শোনা গিয়েছে, বাংলায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সমান জনপ্রিয়। ধর্মীয় মেরুকরণ, তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ, মতুয়া ভোট, তফসিলি ভোট-সহ একাধিক ফ্যাক্টর কাজ করছে বিজেপির পক্ষে। ওই অডিও ক্লিপে (এই ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল) পিকেকে যা বলতে শোনা গিয়েছে, তার সারমর্ম হল বাংলার ভোটে হাওয়া বিজেপির পক্ষেই আছে। যদিও, বিজেপি নেতা অমিত মালব্য এই অডিও ক্লিপ প্রকাশ করার কিছুক্ষণের মধ্যেই পিকে পালটা দিয়েছেন। তাঁর দাবি, আংশিক অডিও ক্লিপ প্রকাশ করে লাফালাফি করছে বিজেপি।
অমিত মালব্যর (Amit Malviya) প্রকাশ করা অডিও ক্লিপে প্রশান্ত কিশোরকে বলতে শোনা গিয়েছে, “মেরুকরণ, মোদি, হিন্দিভাষী ভোটাররা বাংলার ভোটে ফ্যাক্টর। মোদি এখানে জনপ্রিয়। মতুয়ারা বেশিরভাগ বিজেপিকে ভোট দেবেন। ৭৫ শতাংশ মতুয়া ভোট দেবে বিজেপিকে। বাকি ২৫ শতাংশ ভোট দেবে তৃণমূলকে। তফসিলি ভোটের একটা বড় অংশও পাবে গেরুয়া শিবির। এমনও নয় যে তৃণমূলস্তরে বিজেপির কর্মী নেই। বাম কর্মীরাও বিজেপির হয়ে ভোট করছেন। একটা-দুটো জেলা বাদ দিলে এমন কোনও জায়গা নেই, যেখানে বিজেপির শক্তিশালী সংঠন নেই। বাংলায় সমীক্ষা করলে মনে হবে, বিজেপিই সরকার গড়বে। কারণ বিজেপি সমর্থকদের পাশাপাশি সিপিএমকে যে ১০-১৫ শতাংশ মানুষ ভোট দেবে, তাঁরাও মনে করছে বিজেপি সরকার গড়বে।” প্রশান্ত যখন এই মন্তব্য করছেন তখন এক সাংবাদিককে প্রশ্ন করতে শোনা যায়, তাহলে বাংলায় তৃণমূলকে কারা ভোট দেবে? তখন পিকে বলেন, “আমি বলেছি হিন্দুদের মধ্যে ৫০-৫৫ শতাংশ ভোটার বিজেপিকে ভোট দেবে…” ঠিক এখানেই অমিত মালব্যর প্রকাশ করা অডিও ক্লিপটি শেষ হয়ে যায়। এরপর পিকে কী বলতে চেয়েছেন তা প্রকাশ করেনি বিজেপি।
[আরও পড়ুন: আইএসএফের বিক্ষোভের জের! ভোটের আগের রাতে সরানো হল ভাঙড় থানার আইসিকে]
বিজেপির (BJP) প্রকাশ করা আরও একটি অডিও ক্লিপে প্রশান্ত কিশোরকে স্বীকার করতে শোনা গিয়েছে, “বাংলায় দীর্ঘদিন ধরে শুধু সংখ্যালঘু তোষণের রাজনীতি চলেছে। আর সেটাকেই এবার কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি। হিন্দুরা বিজেপিকে নিজেদের দল মনে করছে।” তৃণমূলের ভোটকুশলীকে বলতে শোনা যায়, ‘মোদির বিরুদ্ধে বাংলায় কোনও প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা নেই। বাংলায় মোদি জনপ্রিয়। ১০-২৫ শতাংশ মানুষ মোদিকে ভগবান মনে করেন। তাছাড়া প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই আছে। এটা অনেক বড় ব্যাপার। রাজ্যে সমীক্ষা করলে দেখা যাবে মোদি (Narendra Modi) এবং মমতা সমান জনপ্রিয়। মোদি এখানে জনপ্রিয় বলেই ওঁর সভায় ভিড় হচ্ছে। এই জনপ্রিয়তার আরও একটা কারণ, বাংলা এখনও বিজেপিকে আগে দেখেনি। মানুষের মনে হচ্ছে বিজেপি এমন কিছু করবে, যা আমরা কখনও পাইনি। তাই বহু মানুষ মোদিকে সুযোগ দিতে চাইছে।” রাজ্যে বিজেপির পালে হাওয়া লাগার তিনটি মূল কারণও উল্লেখ করেছেন প্রশান্ত কিশোর। তাঁর দাবি, মোদির জনপ্রিয়তা, তৃণমূলের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ, মেরুকরণ এবং বিজেপির সংগঠন বাংলার ভোটে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।”
[আরও পড়ুন: প্রথমবার ভোট দিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু যুবকের, রণক্ষেত্র শীতলকুচি, নামল RAF]
যদিও, অমিত মালব্য এই অডিও ক্লিপ প্রকাশ করার কিছুক্ষণ পরই সংবাদসংস্থা এএনআইকে পিকে জানান,”আমার ভাল লাগছে যে বিজেপি নিজেদের নেতাদের কথার থেকে আমার একটা ক্লাবহাউস চ্যাটকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। আমার কথোপকথনের আংশিক অডিও প্রকাশ করছে বিজেপি। ওঁদের বলব, পারলে পুরো ক্লিপটা প্রকাশ করুন।”