সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রসগোল্লা কার? বাংলার না ওড়িশার? দীর্ঘদিন ধরে চলা এই তর্কে অবশেষে দাঁড়ি পড়ল। মঙ্গলবার জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন বা জিআই কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিল রসগোল্লা পশ্চিমবঙ্গেরই। সেটি বাংলার নিজস্ব। এতে ওড়িশার কোনও অধিকার নেই। তাই সেরাজ্যের অধিকার খারিজ করা হল। আর রসগোল্লার জিআই রেজিস্ট্রেশন পেল পশ্চিমবঙ্গ। আর এরপরই সুদূর লন্ডন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে শুভেচ্ছা জানান। লেখেন, ‘বেশ মিষ্টি খবর। আমরা আনন্দিত এবং গর্বিত।’
[ অনলাইনে কেনাকাটার বিল মেটাতে নিজেরই অপহরণের গল্প পড়ুয়ার ]
বর্ধমানের সীতাভোগ-মিহিদানা পরীক্ষায় পাস৷ এমনকী বাংলার তুলাইপাঞ্জি ও গোবিন্দভোগ চালও পাস করেছিল৷ কিন্তু গোল বেধেছিল রসগোল্লায়। বাংলার নিজস্ব পাঁচ উৎপাদনের ‘জিআই’ বা ‘জিওলজিক্যাল আইডেন্টিফিকেশন’ ট্যাগ পেতে বছর দুয়েক আগেই আবেদন জানিয়েছিল রাজ্য সরকার৷ প্রথম চারটিকে নিয়ে সমস্যা খুব একটা কখনওই ছিল না৷ গোল বেধেছিল পাঁচ নম্বর অর্থাৎ রসগোল্লাকে নিয়ে৷ গোল বাধার কারণ বাংলার পাশাপাশি ওড়িশারও এই রসগোল্লার পেটেন্ট দাবি৷ এরপরই এই মিষ্টি কার নিজস্ব উৎপাদন, সেই নিয়ে শুরু হয়ে যায় দড়ি টানাটানি। জিআই কর্তৃপক্ষের কাছে দু’রাজ্যই নিজস্ব দাবির সপক্ষে যুক্তি পেশ করে। সেগুলি খতিয়ে দেখেই জিআই কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিল, রসগোল্লা বাংলার নিজস্ব। তাতে ওড়িশার কোনও রকম অধিকার নেই। এই সরকারি স্বীকৃতি পাওয়ার পরই এখন থেকে রসগোল্লাকে ‘বাংলার রসগোল্লা’ বলার অধিকারও মিলল।
[ সন্তানের গায়ের রং ফর্সা, অজুহাতে শিশুসন্তানকে খুন করল বাবা! ]
রসগোল্লা নিয়ে এই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত বেশ কয়েকদিন আগেই। ‘বাংলার রসগোল্লা’ নিয়ে কী সমস্যা তৈরি হয়েছিল? মূল সমস্যা ছিল এই রসগোল্লার মালিকানা দাবি করে ওড়িশার দৌড়ে নামা৷ যদিও তাদের পক্ষ থেকে যে রসগোল্লার পেটেন্ট চাওয়া হয়েছিল, তার সঙ্গে বাংলার বিশ্ববিখ্যাত রসগোল্লার মিলের থেকে অমিল বিস্তর৷ ওড়িশা সরকার যাকে রসগোল্লা বলে দাবি করছে, তার স্থানীয় নাম ‘ক্ষীরমোহন’৷ উপকরণ সুজি, ক্ষীর ও গুড়৷ এটি মূলত পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দিরে ভোগ হিসেবে দেওয়া হয়ে থাকে। অন্যদিকে, বাংলার রসগোল্লা মূল উপাদান ছানা ও চিনির রস৷ এরপরই ‘রসগোল্লা’ নামের বদলে পেটেন্ট চাওয়া হয় ‘বাংলার রসগোল্লা’ নামে৷ গত বছরই চেন্নাই থেকে ‘জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন রেজিস্ট্রি’-র আধিকারিকরা এসেছিলেন কলকাতায়৷ রাজ্য সরকারের কাছে তাঁরা রসগোল্লার রসের ‘ভিসকোসিটি’ বা ঘনত্ব ও তার ‘রেঞ্জ’ বা কতদূর পর্যন্ত সেই ঘনত্বের বিস্তৃতি– এই সমস্ত তথ্য জানতে চান৷ পরে রাজ্যের পক্ষ থেকে সেই রিপোর্টও পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপরও একের পর এক স্বপক্ষে যুক্তিও দেওয়া হয়। আর তাতেই হাসিল হল কাজ। রসগোল্লা এবার থেকে বাংলারই।
[ জয়েন্টের জন্য উচ্চমাধ্যমিকের সূচিতে রদবদল, ঘোষণা সংসদের ]
The post ওড়িশাকে হারিয়ে রসগোল্লার অধিকার পেল বাংলা appeared first on Sangbad Pratidin.
