বাবুল হক, মালদহ: "ওর সঙ্গে এখন আর কোনও সম্পর্ক নেই। আগে টের পেলে ধরিয়ে দিতাম।" দাবি মালদহের ইংরেজবাজারের তৃণমূল কাউন্সিলর খুনে অভিযুক্ত বাবলু যাদবের স্ত্রীর। কাউন্সিলর খুনের ঘটনার পর থেকেই পলাতক বাবলু। জেলা পুলিশের তরফে তার মাথার দাম ধার্য করা হয়েছে ২ লক্ষ টাকা।
বাবলুর স্ত্রীর সুচরিতার দাবি, "বাবলু আসলে ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জের বাসিন্দা। কোনও কাজ করত না। অথচ গভীর রাতে বাড়ি ফিরত। এখন আর আমার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই ওর। যদি আগে টের পেতাম ও খুনি, তাহলে ধরিয়ে দিতাম।" জেলা পুলিশের তরফে মাথার দাম ধার্য করে দেওয়া কৃষ্ণ রজকের সঙ্গে বাবলুর সুসম্পর্ক ছিল, তা জানান সুচরিতা। তিনি বলেন, "কৃষ্ণ মাঝে মাঝেই আমাদের বাড়ি আসত। তবে ১ জানুয়ারির পর থেকে ওকে আর দেখতে পাইনি। ২ জানুয়ারি পুলিশ আমার বাড়িতে এসেছিল। পুলিশকেও তাই জানিয়েছি।" পুলিশকে তদন্তে সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন বাবলুর স্ত্রীর।
গত ২ জানুয়ারি, মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর দুলাল ওরফে বাবলা সরকার তাঁর নিজের কারখানায় যাচ্ছিলেন। পাইপ লাইন মোড়ে তাঁর ব্যক্তিগত গাড়ি থেকে নামেন। অভিযোগ, সেই সময় বাইকে করে আসা চার দুষ্কৃতী কাউন্সিলরকে ধাওয়া করে। গাড়ি থেকে নামামাত্রই কাউন্সিলর দৌড়ে তাঁর কারখানার উলটো দিকে একটি দোকানে দৌড়ে যান। বাঁচার চেষ্টা করেন। দুষ্কৃতীরাও ওই দোকানের ভিতরে ঢুকে যায়। কাউন্সিলরকে লক্ষ্য করে ৪ রাউন্ড গুলি চালায়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত্যু হয় কাউন্সিলরের। এই ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপারকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় মোট ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পলাতক কৃষ্ণ রজক ওরফে রোহন এবং বাবলু যাদব। জেলা পুলিশ প্রশাসনের তরফে ২ লক্ষ টাকা করে তাদের মাথার দাম ধার্য করা হয়েছে।
এদিকে, তৃণমূল নেতা খুনে তিনদিন কেটে গেলেও মাস্টারমাইন্ড কে, তা জানা যায়নি। বাবলাকে খুনের ‘সুপারি’ কার নির্দেশে দেওয়া হয়েছিল? এই খুনের নেপথ্যে কোনও বড়সড় মাথা রয়েছে কিনা, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন নিহত তৃণমূল নেতার স্ত্রী তথা ইংরেজবাজার পুরসভার কাউন্সিলর চৈতালি সরকার।