নন্দন দত্ত, সিউড়ি: ২ বছরের ছেলেকে কোমরের সঙ্গে গামছায় বেঁধে কুয়োয় ঝাঁপ। আত্মঘাতী হলেন বীরভূমের (Birbhum) মহম্মদবাজারের গৃহবধূ। ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে সুইসাইড নোটও (Suicide Note)। তাতে লেখা, তাঁর মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। যেন স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির কাউকে জড়ানো না হয়, তা লিখেছেন বধূ। এমনকী কোথায় তাঁকে দাহ করা হবে, তাও উল্লেখ করা হয়েছে সেই নোটে। সংসারে কোনও অশান্তি না থাকা সত্ত্বেও কেন তিনি দুধের সন্তানকে নিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিলেন, তা ভেবে হতবাক সকলেই। তদন্ত শুরু করেছে মহম্মদবাজার থানার পুলিশ। মৃতার স্বামী উজ্জ্বল দোলুইকে আটক করা হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।
মহম্মদবাজারের শুকনা গ্রামে ৩ বছর আগে বিয়ে হয় শ্রীনিধিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সিউর গ্রামের যুবতী পিঙ্কি দোলুইয়ের। ২ বছরের ছেলে উৎপলকে নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে নিখোঁজ (Missing) হয়ে যান। গ্রাম ও তার আশেপাশে তাঁর খোঁজ শুরু করে পরিবার। কিন্তু কোথাও তাঁকে বা ছেলেকে পাওয়া যায়নি। পুলিশের দ্বারস্থ হয় পরিবার।
[আরও পডুন: ‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার’, আড়াল থেকেই নিয়োগ দুর্নীতিতে মুখ খুললেন হৈমন্তী]
এরপর শুক্রবার সকালে পিঙ্কি, উৎপলের নিখোঁজ রহস্যের জট খোলে। নিজের ঘর থেকে পিঙ্কির লেখা একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়। তাতে লেখা – ”আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। আমার স্বামী বা শ্বশুরকে যেন দায়ী না করা হয়। আমি গ্রামের মধ্যে ইদারায় আত্মঘাতী হলাম। কঙ্কালীতলা শ্মশানে আমার দেহ দাহ করা হোক।” এই নোট দেখে পরিবারের সদস্যরা পুলিশে খবর পাঠান। লোক ডেকে, দড়ি নিয়ে ইদারায় নামেন। উদ্ধার হয় পিঙ্কি এবং তাঁর শিশুপুত্রের দেহ। দেখা যায়, মায়ের কোমরে গামছার সঙ্গে বাঁধা ছোট্ট উৎপল।
[আরও পডুন: প্রয়াত বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়]
পিঙ্কির বাবা নিবারণ দোলুই জানিয়েছেন, তিন বছর আগে এই গ্রামে মেয়ের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে কোনও অশান্তি ছিল না। কিন্তু তা সত্ত্বেও মেয়ে কেন এমন ঘটনা ঘটাল, তাও আবার ২ বছরের সন্তানকে নিয়ে, তা বুঝতেই পারছেন না কেউ। হতবাক পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও। তাঁরা এনিয়ে কেউ কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে নারাজ। পুলিশ মৃতদেহ দুটি ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। শুরু হয়েছে তদন্ত।