বাবুল হক, মালদহ: প্রেমিক (Lover)ও তার বন্ধুর সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে স্বামীকে খুন। প্রমাণ লোপাট করতে বাড়ি থেকে দূরের একটি বাগানে মৃতদেহ ফেলে দেওয়া হয়। তারপর আবার স্বামী নিখোঁজ বলে থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়। তবে এত কিছু করেও শেষরক্ষা হয়নি। নিখোঁজ রহস্যের কিনারা করতে গিয়ে পুলিশ খুব সহজেই ধরে ফেলে সবটা। স্ত্রী-ই প্রেমিকের সঙ্গে জোট বেঁধে স্বামীকে খুন করেছে – পুলিশি জেরার মুখে পড়ে নিজেদের দোষ কবুল করে দোষীরা। মালদহের (Maldah)ইংরেজবাজার থানা এলাকার ঘটনায় গ্রেপ্তার (Arrested)করা হয়েছে তিনজনকে।
বৃহস্পতিবার রাতে শোভানগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় একটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, মৃতের নাম সাদিকুল খান, বয়স ৩৮ বছর। বাড়ি এলাকারই মোহনপুরে। সাদিকুল পেশায় একজন নির্মাণকর্মী। জানা যায়, গত ১০ জানুয়ারি থেকে সাদিকুল নিখোঁজ। ১৬ তারিখ থানায় মিসিং ডায়েরি দায়ের করেছে পরিবার। সেই ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ সহজেই কিনারা করে ফেলে। সাদিকুলকে খুনের অভিযোগ প্রথমে লালচাঁদ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারপর গ্রেপ্তার হয় নুর আলম নামে আরেকজন। প্রত্যেকের বাড়ি শোভানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোহনপুরে। এদের জেরা করতেই উঠে আসে নিহত সাদিকুলের স্ত্রী শরিফা বিবির নাম। এরপর শরিফা বিবিকেও রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনজনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতেই রহস্যের জট খোলে।
[আরও পড়ুন: ‘ব্যক্তিগত সমস্যা’, কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ছাড়তে চেয়ে দলকে চিঠি বাঁকুড়ার ২ ‘বিক্ষুব্ধ’ বিধায়কের]
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শরিফা বিবির সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক এলাকার যুবক লালচাঁদের। সাদিকুলের সঙ্গে থাকতে চাইছিল না শরিফা। তাই পথের কাঁটা সরাতে স্বামীকে খুনের পরিকল্পনা করে। প্রেমিক লালচাঁদ ও তার বন্ধু নুর আলম ষড়যন্ত্র করে শরিফার কথাতেই সাদিকুলকে খুনের পর মৃতদেহ বাগানে ফেলে দিয়ে আসে। ঘটনার কয়েকদিন পর আবার শরিফাই থানায় নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের করেন। পরে ধরা পড়ার পর সে এসব কথাই কবুল করেছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। কীভাবে খুন করা হয়েছিল সাদিকুলকে, তা জানতে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। স্ত্রী-সহ তিনজনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে পুলিশ আরও জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়। হত্যাকাণ্ডে আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।