সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শব্দ, বাক্য, কথার ভাষা নয়। এ ভাষা অন্য। এ ভাষা চিত্রশিল্পের। এখানে একেকটা রেখাই ভাব বিনিময়ের মাধ্যম। এখানে মিলেমিশে যায় প্রাচ্য-পাশ্চাত্য। জাপানি চিত্রশিল্প কিংবা লোককথার সহজ-সরল বঙ্গীকরণ প্রকাশ পায় বাংলার পটশিল্পে! শিল্প জগতে আদানপ্রদানে এমনই মহৎ উদ্যোগ নিয়েছেন বাংলারই এক কন্যা তনিমা। লন্ডনের এক প্রদর্শনী দেখে তাঁর মাথায় প্রথম অভিনব ভাবনা আসে। বিভিন্ন শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়ে সম্পূর্ণ অন্য ভাষা শিল্পভাষা তৈরি করতে চান তিনি। সেই লক্ষ্যে জাপান (Japan) আর বাংলার সাংস্কৃতিক বিনিময় ও মিলমিশ ঘটানোর জন্য পরিক্রমা শুরু করেন।
ইতিমধ্যেই এই চিত্র নিয়ে প্রদর্শনী হয়েছে লন্ডনে।
ছবির মতো সুন্দর দেশ জাপানের লোককথাও বড় মিষ্টি। ছবির মতোই প্রায়। একেকটা গল্প পড়লে চোখের সামনে ভেসে ওঠে দৃশ্যপট। ঠিক যেমন আমাদের পটচিত্র কিংবা বিহারের মধুবনী (Madhubani) চিত্র। রং, তুলির সূক্ষ্ম কাজে একেকটা গল্প বলা হচ্ছে যেন। তাই তো এই দুয়ের মেলবন্ধন ঘটানোর ভাবনা ভেবেছেন বঙ্গললনা তনিমা। তাঁর সঙ্গে এই কাজে শামিল জাপানের ইউকি, শিল্পের বিষয় যাঁর রুচি একেবারে অন্যরকম। বিশ্ব ঘুরে বিভিন্ন স্বাদের শিল্পকর্ম থেকে তিনি রসদ সংগ্রহ করেন। তাঁরাই উদ্যোগ নিয়েছেন, জাপান আর বাংলার মধ্যে শৈল্পিক বন্ধুত্ব স্থাপনের।
জাপানের ছবি।
ঠিক হয়েছে, জাপানি লোককাহিনি (Folklore) ছবিতে ফুটিয়ে তুলবেন বাংলার পটচিত্রী আর বিহারের মধুবনী চিত্রশিল্পীরা। পিংলার পুতুল আর চন্দন চিত্রকর থেকে পাটনার নিশা ও স্বপ্না ঠাকুর হাতে হাত মিলিয়েছেন জাপানি কাহিনির টানে। পুতুল-চন্দনের হাতের আঁকায় (Drawing) ক্যানভাসে পড়া যাবে জাপানের 'উরাশিমা তারো'। আর মধুবনী চিত্রের তুলিতে 'কাগুয়া হাইম' ফুটবে স্বপ্না-নিশার হাত ধরে।
[আরও পড়ুন: বসিরহাটের নির্বাচনী ফল নিয়ে মামলা, নথি সংরক্ষণের নির্দেশ, সব পক্ষকে নোটিস হাই কোর্টের]
এই লক্ষ্য নিয়ে তনিমা-ইউকি ঘুরে বেরিয়েছেন ভারতের নানা প্রান্তে। পটশিল্পের জন্য বিখ্যাত পিংলাতেও (Pingla) গিয়েছিলেন তাঁরা। কথা বলেছেন শিল্পীদের সঙ্গে। দেখেছেন তাঁদের অসামান্য হাতের কাজ। আর তার পরই বুঝিয়ে দিয়েছেন শিল্পজগতে জাপান-ভারতের বন্ধুত্বের কথা। বুঝিয়েছেন, কী তাঁদের মহৎ উদ্যোগ। সেইমতো কাজও শুরু হয়েছে। তনিমা জানিয়েছেন, জাপানের গল্পকথাকে চিত্রকলায় রূপান্তরিত করে গোটা বিশ্বে তার প্রদর্শনী করবেন তাঁরা।
বাংলার পটচিত্র।