দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: তারকেশ্বর কলেজে পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যানের ছেলের আইবুড়ো ভাত অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক বিতর্ক। গত ১১ জানুয়ারি কলেজের প্রিন্সিপালের উপস্থিতিতে কলেজের স্টাফ ক্যান্টিনে আইবুড়ো ভাত খাওয়ানো হয় তাঁকে। ওই আইবুড়ো ভাত অনুষ্ঠানের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকে বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছে। এই অনুষ্ঠানের তীব্র নিন্দা করেছেন বিরোধীরা। কলেজ কর্তৃপক্ষের সাফাই কলেজের পক্ষ থেকে কোনও অনুষ্ঠান করা হয়নি।
তারকেশ্বর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান স্বপন সামন্তর ছেলে অর্ণব সামন্ত ওই কলেজেরই কর্মী। ঘটনার দিন কলেজের স্টাফ ক্যান্টিনে টেবিলের উপর ফুল দিয়ে সাজিয়ে রীতিমতো ষোড়শ পদে খাবার খাওয়ানো হয় তাঁকে। আর এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হতেই রীতিমতো বিতর্ক দেখা দিয়েছে। কলেজের প্রিন্সিপাল অমলকান্ত হাটি অবশ্য এর মধ্যে কোন অন্যায় দেখছেন না। তিনি বলেন, “ওই যুবকের বন্ধুরা কলেজের স্টাফ ক্যান্টিনে তাঁকে খাইয়েছেন। সেখানে কলেজ কর্তৃপক্ষ কিছুই করেনি।” যদিও ওই অনুষ্ঠানে প্রিন্সিপালকে দেখা গেছে। অর্ণব সামন্ত অবশ্য এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
[আরও পড়ুন: প্যাঙ্গোলিন বিক্রি করতে গিয়ে গ্রেপ্তার তৃণমূল উপপ্রধান, ‘শাস্তি হবেই’, মন্তব্য বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়র]
তবে তারকেশ্বর পুরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান উত্তম কুণ্ডু জানান, যেহেতু তিনি চেয়ারম্যান সেহেতু তাঁর কলেজের গভর্নিং বডিতে থাকার কথা। কিন্তু তাঁকে সেখানে না রেখে প্রাক্তন চেয়ারম্যানকে গভর্নিং বডিতে রেখে দেওয়া হয়েছে। উত্তমবাবু এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেন, “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই ধরনের অনুষ্ঠান করা ঠিক নয়। এর ফলে ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে।” অন্যদিকে, তারকেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক রামেন্দু সিংহরায় বলেন, “যদি এটা হয়ে থাকে তবে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” তিনি দলের পক্ষ থেকে ভুল স্বীকার করেন। বলেন, “কোন সামাজিক ও মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান বাড়িতে নয়তো মন্দিরে হওয়াটাই চিরাচরিত প্রথা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের অনুষ্ঠান হওয়াটা বাঞ্ছনীয় নয়।” তারকেশ্বর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান স্বপন সামন্ত বিষয়টি তাঁর অজানা বলেই জানান।
বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার অন্যতম নেতা গণেশ চক্রবর্তীও এর তীব্র নিন্দা করেন। এই ধরনের ঘটনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে কলুষিত করছে বলেই মত তাঁর। উল্লেখ্য, গত বছর শ্রীরামপুরের একটি উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষিকাকে সাধ ভক্ষণ করানোকে কেন্দ্র করে তীব্র বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। সেই সময় স্থানীয় কাউন্সিলর-সহ অন্যান্যদের হস্তক্ষেপে বিষয়টি মেটে। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই ফের কলেজে আইবুড়ো ভাত খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে।