স্টাফ রিপোর্টার: সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফির পর বিজয় হাজারে ট্রফি (Vijay Hazare Trophy)। দুই টুর্নামেন্ট এবং দু’টোতেই চরম ব্যর্থ বাংলা (Begngal cricket team)। যার পর তীব্র অশান্তি লেগে গেল বঙ্গ ক্রিকেট সংসারে। ক্রিকেটাররা কাঠগড়ায়। কোচ অরুণ লাল (Arun Lal) জবাবদিহির মুখে। বাদবাকি সাপোর্ট স্টাফদের ভবিষ্যৎ মেঘাচ্ছন্ন।
পুরো ঘটনাটা কী? সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে বাংলা পারেনি। বিজয় হাজারে ট্রফি থেকে লজ্জাজনক বিদায় হয়ে গিয়েছে কয়েক দিন আগে। সোমবার বিজয় হাজারে ট্রফির শেষ ম্যাচ ছিল। সেখানেও কুৎসিত ভাবে হরিয়ানার কাছে পাঁচ উইকেটে হারল বাংলা। যার পর ক্ষোভে ফেটে পড়লেন সিএবি কর্তারা। প্রেসিডেন্ট অভিষেক ডালমিয়া উত্তেজিত ভাবে বলে দিলেন, “আমরা অত্যন্ত হতাশ। টিমের কাছ থেকে আরও ভাল কিছু আশা করেছিলাম।” সিএবি সচিব স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় আবার বললেন, “ক্রিকেটারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সোজা গিয়ে স্থানীয় টুর্নামেন্ট খেলতে। কোনও রকম ওজর-আপত্তি শোনা হবে না।”
[আরও পড়ুন:দুঃস্বপ্নের ISL, টুর্নামেন্টে লাল-হলুদের হতশ্রী পারফরম্যান্সের ৪টি কারণ জানালেন মনোরঞ্জন]
খবর যা, তাতে চলতি সপ্তাহেই বাংলার কোচ, অধিনায়ক, নির্বাচকদের নিয়ে বৈঠকে বসবে সিএবি। মহাব্যর্থতার কারণ খোঁজা হবে, চাওয়া হবে জবাবদিহি। এ দিনই একপ্রস্থ হয়ে গেল। বাংলা কোচ অরুণ লালকে ডেকে পাঠানো হয় খেলার পর। শোনা গেল, সেই বৈঠকে নাকি খুব ‘সুখকর’ অভিজ্ঞতা হয়নি অরুণের। তবে অরুণ লালের চাকরি যাচ্ছে না এখনই। তিনি থাকছেন। কিন্তু বাকি সাপোর্ট স্টাফদের ব্যাপারে কিছু বলা যাচ্ছে না। যেমন বোলিং কোচ রণদেব বসু। যেমন স্পিন বোলিং পরামর্শদাতা উৎপল চট্টোপাধ্যায়। তাঁদের সরানো হতে পারে। আবার অন্যত্র পাঠানো হতে পারে। অন্যত্র অর্থাৎ সিএবির ভিশন প্রোজেক্টে।
সিএবি কর্তাদের অসূয়া বোলারদের ফিটনেস নিয়ে। বিশেষ করে ঈশান পোড়েল। বিজয় হাজারেতে তথাকথিত বঙ্গ পেসার যা বল করেছেন, তা লেখা মানে কাগজের জায়গা নষ্ট। বলা হচ্ছে, এক বছর আগেও যা ছিলেন ঈশান, এখন তার ছায়ামাত্র। ফিটনেসের অভাবে ভুগছেন। রুষ্ট ভাবে শোনানো হল, ঈশান যে আনফিট সেটা সিএবিকে সাপোর্ট স্টাফরা জানাননি কেন আগেভাগে? ক্ষোভ দেখিয়ে বলা হচ্ছে, ভিশনের সঙ্গে যুক্ত কোচেরা বাংলা খেললেই ব্যাগপত্তর নিয়ে বাংলা টিমের সঙ্গে জুড়ে যাচ্ছেন। এত গাদাগাদা সাপোর্ট স্টাফ রেখে লাভ কি টিমের সঙ্গে? তার চেয়ে যে যেখানে ছিলেন, সে সেখানে থাকুন। ব্যাটসম্যানদের নিয়েও ক্ষোভ-বিক্ষোভ আছে। বলা হচ্ছে, দু’শো পার করতে গলদঘর্ম হতে হচ্ছে ব্যাটসম্যানদের।
[আরও পড়ুন: মোতেরার পিচ নিয়ে বিতর্কিত টুইট ভনের, ইংল্যান্ডের কোচকে তুলোধোনা করলেন পিটারসেন]
ক্রিকেটারদের নাকি বলা হবে, অফ সিজন মানে এই নয় যে, তুমি পাঁচ কেজি ওজন বাড়িয়ে ফেলবে। শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনযাপন করতে হবে। কোনও রকম বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না। ভিশন প্রোজেক্ট নিয়েও নাকি কড়াকড়ি বাড়বে সিএবির।
কিন্তু তাতে কতটা লাভ হবে? কারণ, সুদীপ চট্টোপাধ্যায় নামক এক সিনিয়র বঙ্গ ব্যাটসম্যানকে কিন্তু সিএবি কর্তাদের সামনেই অবিচার সহ্য করতে হয়েছে পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি, বিজয় হাজারে ট্রফি– কোথাওই খেলেননি সুদীপ। বলা যায়, খেলানো হয়নি। যেখানে মনোজ তিওয়ারি খেলছেন না, সেখানে সুদীপের মতো অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানকে অনায়াসে ‘ব্রাত্য’ করে রেখেছে টিম!
প্রশ্ন ওঠে, সিএবি সেটা নিয়ে কেন সরব হয়নি এত দিন? কেন বলেনি সুদীপের প্রতি অবিচার নিয়ে? এক উচ্চপদস্থ সিএবি কর্তা রাতের দিকে বললেন যে, দিন কয়েক আগে বলেছিলেন টিম ম্যানেজমেন্টকে। কোনও সদুত্তর পাননি। কিন্তু কোনও লাভও হয়নি। তিনি নিজে এখনও বুঝে উঠতে পারছেন না কোন যুক্তিতে খেলানো হল না সুদীপকে? শুনলে চমৎকৃত হতে হয়। আচ্ছা, একটা কথা আছে না, প্রতিষ্ঠানের উপরে কেউ নয়? কথাটা বঙ্গ ক্রিকেটের জন্য খাটে তো?