নব্যেন্দু হাজরা: বাজার চলতি কিছু নামী ব্র্যান্ডের অনুকরণে নাম লেখা বোতলের গায়ে। এক ঝলকে মনে হবে ব্র্যান্ডেড কোম্পানিরই জল। কিন্তু আসলে তা নকল। আর এই নকল জলই দেদার বিকোচ্ছে রেলস্টেশন থেকে ট্রেনের কামরা–সর্বত্র। যা খেয়ে অসুস্থও হচ্ছেন কেউ কেউ।
[আরও এক নীরব মোদি! ৮০০ কোটি ঋণখেলাপ করে উধাও Rotomac মালিক]
তবে এতদিন বিষয়টি নিয়ে বিশেষ গা করেননি রেলকর্তারা। সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশে ডায়েরিয়ার প্রকোপ চিন্তা বাড়িয়েছে তাঁদের। কারণ চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, তা ছড়িয়েছে পানীয় জলের সংক্রমণ থেকেই। পুরসভার জলের পাশাপাশি প্যাকেটজাত জল নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। রেলস্টেশনে যেসব জলের বোতল পাওয়া যায় তার দাম ১০ টাকা থেকে ৩০ টাকা। বোতল সিল করা। দেখে বোঝা দায়, এ জল শোধন করা নয়। খেলেই হতে পারে বিপদ। তবে এই বোতলের জল কোথাকার? রেলসূত্রে খবর, স্থানীয় পুরসভার জল অনেক সময় নকল স্টিকার মারা বোতলে ভরে সিল করে বিক্রি হয় বিভিন্ন স্টেশনে, লোকাল এবং দূরপাল্লার ট্রেনে। ব্র্যান্ডেড কোম্পানির থেকে দামটা একটু কম। সাধারণ যাত্রীরা তেষ্টার সময় তাই খেয়ে নেন। ব্র্যান্ড আর দেখেন না। বলছেন এক পানীয় জলের হকার। অনেক সময় তো পুরসভার পরিশুদ্ধ জলও ভরা হয় না। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ড্রামে পড়ে থাকা জল সিল করে বোতলে বিক্রি করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে কেউ অসুস্থ না হলেও পরে রোগভোগ হয়।
[নিজের হাতে স্কুলের টয়লেট পরিষ্কার বিজেপি সাংসদের, ভাইরাল ভিডিও]
রেলের তরফে তাই ফের একবার সতর্ক করে জানানো হয়েছে, আইআরসিটিসি-র স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ছ’টি সংস্থার জল ছাড়া আর কোনও জল স্টেশন বা রেলের কোনও এলাকায় বিক্রি করা যাবে না। যদি কেউ করেন তাহলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই ছ’টি সংস্থা হল, রেল নীর, অ্যাকোয়াফিনা, বিসলেরি, বেইলি, কিনলে এবং অক্সিরিচ। এই সংস্থা ব্যতীত অন্য কোনও সংস্থার জল স্টেশনে বা ট্রেনের কামরায় বিক্রি করা যাবে না। যাতে তা কেউ করতে না পারেন, এবার সেকারণে ধরপাকড় শুরু করছে রেলের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ। প্রতি স্টেশনে এবং ট্রেনের কামরায় চলবে এই অভিযান।
[আধার কার্ড হারিয়েছেন? জেনে নিন কীভাবে সহজেই পাবেন নতুনটি]
অন্যদিকে দক্ষিণ কলকাতার যে সমস্ত এলাকায় ডায়েরিয়া আক্রান্ত মানুষ রয়েছেন, সেখানকার স্টেশনের জলও পরীক্ষা করা হচ্ছে। বাঘাযতীন, যাদবপুর, গড়িয়া, বারুইপুর, ঢাকুরিয়া,-সহ কয়েকটি স্টেশনের ট্যাপকলের জলের নমুনা পাঠানো হয়েছে রেলের ল্যাবরেটরিতে। সেই জলে কোনও বিষ আছে কিনা তা দেখে রিপোর্ট দেওয়া হবে। কারণ প্রতিদিন স্টেশনে থাকা ট্যাপকলের জল খান হাজার হাজার যাত্রী। স্টেশনের এই পানীয় জল সরবরাহ করতে রেলের নিজস্ব পাম্প রয়েছে, তেমনই কিছু জায়গায় পুরসভার জলও রয়েছে। ফলে সংক্রামণ হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, “আইআরসিটিসি-র ঠিক করে দেওয়া জল ছাড়া অন্য কোনও কোম্পানির জল স্টেশনে বা ট্রেন বিক্রি করা যাবে না। নকল জল ধরতে এবার অভিযান চালানো হবে।”
[স্বাস্থ্য সচেতনতায় ভূয়সী প্রশংসা, গোটা বিশ্বে দেখানো হবে ‘প্যাডম্যান’]
The post নামের হেরফেরে ট্রেন বা স্টেশনে দেদারে বিকোচ্ছে নকল জল, বিভ্রান্ত যাত্রীরা appeared first on Sangbad Pratidin.