অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: প্রত্যাশামতই দার্জিলিং পুরসভা দখল করল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। সোমবার চেয়ারম্যান নির্বাচনেও অনুপস্থিত থাকল হামরো পার্টি। চেয়ারম্যান হলেন দীপেন ঠাকুরি ও ভাইস চেয়ারপার্সন হলেন প্রতিভা রাই। এদিন তাঁদের খাদা পড়িয়ে শুভেচ্ছা জানান দলের সভাপতি অনীত থাপা। তিনি বলেন, “পাহাড়ে প্রচুর কাজ বাকি রয়েছে। এবার কাজ করতে হবে।” অন্যদিকে হেরে গিয়ে ফের আইনী লড়াই করার ডাক দেন হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড৷ তিনি বলেন, “অনৈতিকভাবে আমাদের সরানো হয়েছে। আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছি।
সোমবার দার্জিলিং পুরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচন হয়। তৃণমূল কাউন্সিলরের সমর্থনে বোর্ড গঠন করে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। তবে কথা দিলেও নির্বাচনে হামরো পার্টির ১২ জন ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার ৩কাউন্সিলার অংশগ্রহণ করেনি। ফলে সহজেই ১৬টি আসন নিয়ে বোর্ড গঠন করে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। তারা জয় পেতেই দীপেন ঠাকুরিকে চেয়ারম্যান ও প্রতিভা রাইকে ভাইস চেয়ারম্যান করার কথা ঘোষণা করেন অনিত থাপা। প্রতিভা রাই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার আমলে দার্জিলিং পুরসভার চেয়ারম্যান পদ সামলেছিলেন। দল বদলের পর তাকে ভাইস চেয়ারম্যানের পদ দিলেন অনিত থাপা। তবে ক্ষমতা হারিয়ে এখন অজয় এডওয়ার্ড ও বিমল গুরুংয়ের লক্ষ্য বিরোধী শক্তি বাড়ানো। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার অমর লামা পদত্যাগ করায় সেই ওয়ার্ডটি খালি রয়েছে। সেই ওয়ার্ডে উপনির্বাচন করবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। জোট বেঁধেই ওই ওয়ার্ডে লড়বে অজয়রা।
[আরও পড়ুন: ৮ বছরেও টেটের ফল জানতে পারেননি পরীক্ষার্থী! মানিক ভট্টাচার্যকে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা হাই কোর্টের]
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মোর্চার সঙ্গে জোট করে প্রথমে ক্ষমতা বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন অজয় এডওয়ার্ড। কিন্তু কাউন্সিলর ভাঙাতে না পারায় তারা চুড়ান্ত ব্যর্থ হন। তাই আর নির্বাচনে অংশ নেয়নি। এদিকে জয় পেয়েই ১৬জন কাউন্সিলরকে শুভেচ্ছা জানান অনিত থাপা। জয়ের পর তিনি বলেন, “পাহাড়ে অনেক কাজ রয়েছে। দার্জিলিংকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে। যানজটের সমস্যা রয়েছে। পুরসভায় রাজনৈতিক কর্মসূচি হচ্ছে। এসব বন্ধ করা হবে। আমরা মানুষের জন্য কাজ করব।”
অন্যদিকে পরাজয়ের আক্ষেপ রয়েছে হামরো পার্টি ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার। তারা এই বোর্ডকে মেনে নিতে পারছে না। এপ্রসঙ্গে বিমল গুরুং বলেন, “নোংরা রাজনীতি করলেন অনিত থাপা। হামরো পার্টি ক্ষমতায় ছিল। তাদের চালাতে দেওয়া উচিত ছিলো। কিন্তু এবার বিরোধী শক্তি আরও বৃদ্ধি পাবে।” আবার অজয় এডওয়ার্ড বলেন, “আমাদের অনৈতিকভাবে সরানো হল। আমাদের কাউন্সিলাররা দূর্নীতির সঙ্গে আপোস করেনি। সফলতার সঙ্গে পুরসভা পরিচালনা করেছে। মোর্চার কাউন্সিলাররাও আমাদের সহযোগিতা করেছে। তবে আমাদের আইনি লড়াই জারি থাকবে।” এদিকে জয়ের পর কার্শিয়াং এলাকায় বাজি ফাটিয়ে আনন্দ করে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সমর্থকরা।