সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল: বিহারের জামুই (Jamui) জেলার করমটিয়া গ্রাম। আপাত দৃষ্টিতে দেখতে গেলে রুক্ষ-শুষ্ক এলাকা। এটা ধু ধু মাঠ। অনুর্বর জমি। তেমন জনবসতিও নেই। কিন্তু বিহারের এই অনুর্বর-রুক্ষ মাটিই বদলে দিতে পারে গোটা রাজ্যের বলা ভাল গোটা দেশের অর্থনীতি। কারণ, এই মাটির নিচেই সম্ভবত লুকিয়ে আছে দেশের সর্ববৃহৎ সোনার খনি। বলা ভাল স্বর্ণভাণ্ডার। জামুই জেলার করমটিয়া (Karmatia) গ্রামে যে দেশের সবচেয়ে বড় সোনার খনি আছে, সেই জল্পনা বহুদিনের। কিন্তু এবার সরকারও সেই জল্পনাকে গুরুত্ব দেওয়া শুরু করেছে। বিহার সরকার (Bihar government) গুরুত্ব দিয়ে জামুইয়ে স্বর্ণখনি অন্বেষণের প্রক্রিয়া শুরুর অনুমতি দিয়ে দিয়েছে।
প্রত্নতত্ত্ববিদদের ধারণা, জামুইয়ের এই স্বর্ণখনিতে (Jamui gold reserve) অন্তত ২২২.৮৮ মিলিয়ন টন স্বর্ণ আকরিক আছে। এর মধ্যে ৩৭.৬ টন উৎকৃষ্ট খনিজ সোনা। এই বিপুল পরিমাণ আকরিক থেকে প্রচুর ধাতব সোনা তৈরি করা যেতে পারে। এছাড়াও এর সঙ্গে কত উপজাত দ্রব্য তৈরি হবে তার কোনও ইয়ত্তা নেই। এই বিপুল পরিমাণ সোনার হদিশ যদি সত্যিই পাওয়া যায়, আর সেটা যদি বাজারে আসে, তাহলে সোনার দাম রাতারাতি অনেকটা কমে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। জেলা সদর থেকে প্রায় চল্লিশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই করমটিয়া গ্রাম৷ এর আগে ১৯৮২ সালেও এই করমটিয়া গ্রাম শিরোনামে এসেছিল৷ সেই সময়ও এই অঞ্চলে স্বর্ণখনির খবর সামনে এসেছিল৷ যদিও প্রশাসন তাতে গুরুত্ব দেয়নি।
[আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরের মধ্যেই কয়লার ব্যাপক ঘাটতির আশঙ্কা, বিদ্যুৎ সংকটে দেশ!]
২০১১ সালেও আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার তরফে ওই এলাকায় খননের তোড়জোড় শুরু হয়৷ কিন্তু খননের খরচ অত্যাধিক হওয়ায় বিষয়টি ঠান্ডা ঘরে চলে যায়৷ দশ বছর পরে ২০২১ সালে কেন্দ্রীয় খনন মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী (Prahlad Joshi) নতুন করে ওই এলাকায় খননের তোড়জোড় করেন। সংসদে তিনিই জানান, বিহারেই দেশের সর্ববৃহৎ স্বর্ণখনিটি আছে। লিখিত প্রশ্নের জবাবে খনি মন্ত্রী জানান, বিহারে ২২২.৮৮৫ টন ধাতব সোনা আছে। যা কিনা গোটা দেশের ৪৪ শতাংশ সোনার সমান। বিহারে ধাতব সেনা (Gold) আছে ৩৭.৬ টন। তবে, কেন্দ্রের তরফে শেষপর্যন্ত আর কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এবার বিহার সরকার উদ্যোগী হয়েছে।
[আরও পড়ুন: আদানির বন্দরে ৫২ কেজি মাদক উদ্ধার, গুজরাট কেন ‘গেটওয়ে অফ ড্রাগস’ হয়ে উঠছে? প্রশ্ন কংগ্রেসের]
বিহারের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব হরজ্যোত কৌর বামরাহ জানিয়েছেন, বিহার সরকার এই খনির প্রাথমিক অন্বেষণের প্রক্রিয়ায় ছাড়পত্র দিয়েছে। আমরা কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির সঙ্গে একটি MOU স্বাক্ষর করব। প্রাথমিকভাবে আমরা তৃতীয় স্তরের অন্বেষণ করব। যেটা একেবারেই প্রাথমিক অন্বেষণ। সেই প্রক্রিয়া শেষ হবে মাসখানেকের মধ্যেই। তারপর দ্বিতীয় স্তরের অন্বেষণ শুরু হবে। কৌর জানিয়েছেন, জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (GSI) এবং আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (ASI) দেওয়া তথ্য মেনেই করমাটিয়া, ঝাঝা এবং সোনো এলাকায় অন্বেষণ চালানো হবে।