সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিন দুই আগে পর্যন্ত তাঁরা একে অপরের দিকে কটাক্ষের তির ছুঁড়ছিলেন। নীতীশ কুমারের (Nitish Kumar) বারবার অবস্থান বদল নিয়ে প্রশান্ত কিশোর যেমন কটাক্ষের বাণ ছুঁড়ছিলেন, তেমনই নীতীশ কুমার তাঁকে সরাসরি ‘ব্যবসায়ী’ বলে আক্রমণ করেছিলেন। একসময়ের দুই সতীর্থের তিক্ততা চরমে পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু সেই তিক্ততা যেন রাতারাতিই মিলিয়ে গেল। হঠাৎ নিজের পুরনো সঙ্গীর সঙ্গে দেখা করলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। হাসিমুখে ছবিও তুললেন নীতীশ-পিকে (PK)। সেই সঙ্গে জন্ম হয়ে গেল নতুন জল্পনার।
সূত্রের খবর, বুধবার রাতে নীতীশ কুমারের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেছেন প্রশান্ত কিশোর। ভোটকুশলী এবং নীতীশের মধ্যে ‘পিস মেকারে’র ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন প্রাক্তন তৃণমূল নেতা তথা নীতীশের একসময়ের ছায়াসঙ্গী পবন বর্মা (Pawan Verma)। সূত্রের খবর, অন্তত ৪৫ মিনিট কথা হয়েছে নীতীশ এবং পিকের মধ্যে। প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে নীতীশ কুমারের হাত ধরেই হাতেখড়ি হয়েছিল প্রশান্ত কিশোরের। ইদানিং তিনি যতই ‘জন-সূরজ’ করে বেড়ান না কেন, নীতীশকে প্রশান্ত কিশোর এখনও ভুলতে পারেননি। সেটা এই বৈঠকেই স্পষ্ট।
[আরও পড়ুন: বিজেপির নবান্ন অভিযানে পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগায় নিশীথের অনুগামী, ভাইরাল ভিডিও]
নীতীশ-পিকের বৈঠক আবার বিহার তথা জাতীয় রাজনীতিতে নতুন জল্পনার জন্ম দিচ্ছে। বিরোধী শিবিরে ফেরার পর থেকেই নীতীশ নিজেকে প্রধানমন্ত্রী পদের বিকল্প হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি জাতীয় রাজনীতিতে সাফল্য পেতে ফের প্রশান্ত কিশোরের তীক্ষ্ণ মস্তিষ্ককে ব্যবহার করতে চান নীতীশ? নাকি বিহারেই পিকে’র সঙ্গে জোট বেঁধে দলের শক্তি বাড়ানোর কথা ভাবছেন তিনি?
[আরও পড়ুন: ‘মহিলাদের অপছন্দ করেন, পুরুষ পছন্দ করেন শুভেন্দু’, বললেন অভিষেক]
যদিও এ নিয়ে প্রকাশ্যে দু’পক্ষেরই মুখে কুলুপ। বৈঠকের কথা স্বীকার করে নিয়েও পিকের সঙ্গে বিশেষ কোনও আলোচনা হয়নি বলেই দাবি নীতীশের। তিনি বলছেন,”আমরা কথা বলেছি। তবে বিশেষ কিছু নিয়ে নয়। সাধারণ কথাবার্তা। এমন নয় যে আমাদের এটা করা উচিত, ওটা করা উচিত। এসব নিয়ে আলোচনা হয়নি। আমরা একে অপরকে দীর্ঘদিন ধরে চিনি। সুতরাং আমাদের দেখা হওয়াটা অন্যায় নিশ্চয় নয়।” আর পিকে পুরোপুরি সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে গিয়েছেন। কিন্তু ঘটনা হল, নীতীশ কুমার বিজেপি (BJP) শিবির ছেড়ে বিরোধী শিবিরে নাম লেখানোর কিছুদিন আগেও পিকের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তারপরই তাঁর শিবির বদলের সিদ্ধান্ত। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, নীতীশের শিবির বদলের নেপথ্যেও কোথাও না কোথাও পিকে’র মস্তিষ্ক কাজ করেছে। সুতরাং, এই দুই কৌশলীর বৈঠক অরাজনৈতিক হবে না বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের।