সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিহার নির্বাচনের (Bihar Election 2020) আগে বড়সড় ধাক্কা খেল শাসক শিবির। বিধানসভা নির্বাচনে ‘একলা’ চলার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসওয়ানের দল লোকজনশক্তি পার্টি (LJP)। রবিবার সংসদীয় দলের বৈঠকে এনডিএ (NDA) ছাড়ার সিদ্ধান্তে শিলমোহর দিয়েছেন এলজেপি নেতা চিরাগ পাসওয়ান। তবে সূত্রের খবর, বিজেপির সঙ্গে আসন সমঝোতা বজায় রাখছেন তিনি। তাছাড়া জাতীয় স্তরে যে বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা বজায় থাকছে, সেকথা সরকারিভাবেও জানানো হয়েছে এলজেপির তরফে।
আসলে বহুদিন ধরেই চিরাগ পাসওয়ান (Chirag Paswan) এনডিএ’র বড় শরিক জেডিইউয়ের আচরণে ক্ষুব্ধ ছিলেন। নীতীশ কুমারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আদায়-কাঁচকলায়। তাই নীতীশের দল জেডিইউকে (JDU) বেশি আসন ছাড়তে নারাজ ছিলেন না তিনি। চিরাগ চাইছিলেন, বিজেপি এবং তাঁর দল এলজেপি জোট করে বিহারের সিংহভাগ আসনে লড়ুক। কিন্তু সেটা যে বাস্তবসম্মত নয়, তা বুঝতে পেরেছে গেরুয়া শিবির। তাই চিরাগকে বাদ দিয়েই জেডিইউয়ের সঙ্গে আসনরফা চূড়ান্ত করে ফেলেছে বিজেপি (BJP)। ঠিক হয়েছে, এনডিএর দুই বড় জোটসঙ্গী লড়বে ৫০:৫০ ফর্মুলায়। ২৪৩ আসনের মধ্যে নীতীশ কুমারের জেডিইউ লড়বে ১২২ আসনে, বিজেপি লড়বে ১২১ আসনে। এই ১২১ আসনের মধ্যে বিজেপি চাইলে এলজেপির জন্য আসন ছাড়তে পারে। তবে নীতীশের কোটা থেকে কোনও আসন ছাড়া হবে না।
[আরও পড়ুন: কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে ‘কালা কানুন’ বাতিল হবে, পাঞ্জাবে কৃষক বিক্ষোভে বললেন রাহুল]
নীতীশ এবং বিজেপির এই রফার কথা প্রকাশ্যে আসতেই এলজেপির ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে যায়। কারণ চিরাগ পাসওয়ান গত সপ্তাহেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ৪২টির কম আসন ছাড়া হলে তাঁর পক্ষে এনডিএতে থাকা সম্ভব হবে না। এদিকে বিজেপি নিজেদের কোটা থেকে মেরেকেটে ১৫টি আসন ছাড়তে রাজি ছিল। শেষপর্যন্ত সম্মানজনক আসনরফা না হওয়ায় জোট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিল এলজেপি। রবিবার এলজেপির বোর্ড মিটিংয়ে আলাদাভাবে লড়াই করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, চিরাগ পাসওয়ানের দল ২৪৩ আসলের বিহার বিধানসভায় মোট ১০০-র বেশি আসলে লড়বে। নীতীশ কুমারের জেডিইউয়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেবে এলজেপি। কিন্তু বিজেপির কোনও প্রার্থীর বিরুদ্ধে এলজেপির প্রার্থী থাকবে না। অর্থাৎ সেদিক থেকে দেখতে গেলে বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা বজায় রাখছে পাসওয়ানের দল। তাঁরা শুধু নীতীশ কুমারের বিরোধিতা করবে। যা কিনা এনডিএ’র জন্য বেশ অস্বস্তিকর। কারণ, বিহারে নীতীশ কুমারই তাঁদের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী।
[আরও পড়ুন: বিহারে নীতীশ কুমার-বিজেপির মধ্যে আসনরফা চূড়ান্ত, অনিশ্চিত চিরাগ পাসওয়ানের ভবিষ্যৎ]
তবে অস্বস্তি যে শুধু শাসক শিবিরেই কাজ করছে তা কিন্তু না। বিরোধী শিবিরেও একই অবস্থা। আসনরফায় সন্তুষ্ট না হয়ে, গতকালই বিরোধী মহাজোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিকাশশীল ইনসান পার্টির সুপ্রিমো মুকেশ সাহানি। আজ তেজস্বী যাদবকে তোপ দেগে সরকারিভাবে জোট ছেড়ে একা লড়াই করার কথা ঘোষণা করলেন তিনি। একই পথে আরএলএসপি প্রধান উপেন্দ্র কুশওয়াহাও।