সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিহারে ফের নীতীশ কুমারই (Nitish Kumar) মুখ্যমন্ত্রী হবেন। বিজেপি জেডিইউয়ের থেকে বেশি আসন পেলেও নিজেদের পূর্ব প্রতিশ্রুতি থেকে পিছিয়ে আসছে না গেরুয়া শিবির। বিজেপি শিবিরে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সবচেয়ে বড় যে দাবিদার সেই সুশীল মোদিই (Sushil Modi) মঙ্গলবার গভীর রাতে সাংবাদিক বৈঠক করে দলের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন। সুশীলের কথায়, “একসঙ্গে নির্বাচন লড়লে কেউ বেশি আসন পায়, কেউ কম আসন পায়। কিন্তু আমরা নিজেদের মধ্যে কাউকে ছোট বা কাউকে বড় বলে মনে করি না।”
বিহারে বহুদিন ধরেই নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেডের ‘ছোট ভাই’ হিসেবে তাঁর সঙ্গ দিয়ে আসছে বিজেপি। ২০১৪ লোকসভার পর ছবিটা খানিকটা বদলেছে। সেবারের নির্বাচনে বিজেপির অভূতপূর্ব সাফল্যের পর এনডিএ ছাড়েন নীতীশ। মহাজোটে যোগ দিয়ে ফের মুখ্যমন্ত্রী হন। কিন্তু লালুর (Lalu Prasad Yadav) সঙ্গে বেশিদিন ঘর করতে পারেননি বিহারের সুশাসনবাবু। ফের বিজেপিরই দ্বারস্থ হতে হয় তাঁকে। এবারে আরজেডির সঙ্গ ছেড়ে ফের বিজেপির সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। তবে, এবারে এই বিজেপি-জেডিইউ (JDU) জোটে একটা জিনিস বদলে যায়। নীতীশকে ‘বড় ভাই’য়ের মর্যাদা দেওয়া বন্ধ করে দেয় বিজেপি। ততদিনে শক্তির বিচারে তাঁরা সমান সমান হয়ে গেছে। তাই এই দুই জোটসঙ্গী নিজেদের ‘যমজ ভাই’ হিসেবে পরিচয় দেওয়া শুরু করে। ২০১৯ লোকসভা এবং ২০২০ বিধানসভার আসনরফার ক্ষেত্রেও দেখা যায় দুই শিবির সমান ভাগ পাচ্ছে।
[আরও পড়ুন: ‘বিজেপি আপনাকে শেষ করে দেবে, মহাজোটে চলে আসুন’, নীতীশকে টোপ কংগ্রেসের]
এবারের বিধানসভা নির্বাচনের আগে নীতীশের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া কাজ করছিল। ভোটের আগেই বোঝা গিয়েছিল নীতীশ কুমারের জেডিইউয়ের থেকে বিজেপি (BJP) বেশি আসন পাবে। প্রশ্ন উঠছিল, সেক্ষেত্রে কি মুখ্যমন্ত্রী পদে নীতীশকে সরিয়ে বিজেপির কাউকে বসানো হবে? প্রচারের সময় মোদির জনসভার পোস্টার থেকে নীতীশ কুমারের ছবি উধাও হয়ে যাওয়ায় সেই প্রশ্ন আরও জোরাল হয়েছিল। কিন্তু অমিত শাহ, জে পি নাড্ডা থেকে শুরু করে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) বারবার বলে গিয়েছেন, যেই বেশি আসন পাক মুখ্যমন্ত্রী নীতীশই হবেন।
[আরও পড়ুন: ‘জয় শ্রীরাম বলতে সমস্যাটা কোথায়?’ মধ্যপ্রদেশে জয়ের পর কংগ্রেসকে প্রশ্ন সিন্ধিয়ার]
ভোটের ফলপ্রকাশের পর দেখে গেল বিজেপি এবং জেডিইউয়ের মধ্যে বিস্তর ফারাক। বিজেপি যেখানে ৭৪ আসন পেয়েছে, সেখানে জেডিইউয়ের আসনসংখ্যা মাত্র ৪৩। এই বিপুল ফারাকের পর বিজেপির একাংশ থেকে দাবি উঠছিল, এবার অন্তত দলের কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করা হোক। কিন্তু সুশীল মোদি জানিয়ে দিলেন, তাঁরা প্রতিশ্রুতিভঙ্গ করবেন না। নীতীশ কুমারই টানা চতুর্থবারের জন্য বিহারের মসনদে বসবেন। আসলে সম্প্রতি মহারাষ্ট্র এবং পাঞ্জাবে সঙ্গিহীন হয়েছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের বড় জোটসঙ্গী বলতে শুধু জেডিইউ। স্বাভাবিকভাবেই, তাঁদের হাতছাড়া করতে চাইছে না বিজেপি। আর প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে কথা দিয়েছেন, তা ফেলাও যাচ্ছে না। তাই পুরোপুরি আন্তরিকভাবে না হলেও, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে নীতীশেই শিলমোহর দিতে চলেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।