অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: ডোমজুড়ে গয়নার দোকানে দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনায় দুষ্কৃতীদল বিহারের কোনও কুখ্যাত গ্যাং বলেই প্রাথমিক তদন্তে মনে করছেন তদন্তকারীরা। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে, নানা নমুনা সংগ্রহ করে, বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে ও ঘটনার মোডাস অপারেন্ডি দেখে তদন্তকারীদের ধারণা বিহারের কোনও কুখ্যাত দুষ্কৃতীর গ্যাং-ই এই কাজ করেছে। এর আগেও বিহারের এই গ্যাংটি কলকাতা-সহ ভিনরাজ্যে সোনার গয়নার দোকানে এধরনের অপারেশন করেছে। ওই দুষ্কৃতীদের খোঁজেই এখন সিআইডি ও হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দারা যৌথভাবে তদন্ত চালাচ্ছে। পাশাপাশি আসানসোলের রানিগঞ্জে ডাকাতির ঘটনার সঙ্গেও এই ঘটনার কোনও যোগ রয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
মঙ্গলবার দুপুরে ডাকাতির ঘটনার পরই ডোমজুড় থানার পাশাপাশি এই ঘটনায় তদন্তভার নেয় সিআইডি ও হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দারা। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেন সিআইডির ফরেন্সিক দল। এর পর বুধবার সকালেই তদন্তকারীদের দুটি দল ডোমজুড়ের ফোকর দোকান এলাকায় তদন্তে যায়। আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ চালান তদন্তকারীরা। পুরো এলাকা ঘুরে দেখেন তাঁরা। কীভাবে এসে ডাকাতদল অপারেশন চালিয়েছে তা বোঝার চেষ্টা করেন।
[আরও পড়ুন: কন্যাশ্রীর ধাঁচে ‘নিযুত ময়না’ প্রকল্প হিমন্তের, প্রতি মাসে ছাত্রীদের স্টাইপেন্ড সরকারের]
পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার ৪ জন দুষ্কৃতী ২টি বাইকে চেপে গয়নার দোকানটিতে ঢোকে। এমনকী ডোমজুড়ের একটি গলি পথ দিয়ে বাইক নিয়ে ঢোকে ও অপারেশন শেষে সেখান দিয়েই চম্পট দেয় তারা। আর এই ঘটনায় বেশকয়েকটি বিষয় ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। যদি ভিনরাজ্যের দুষ্কৃতী হয় তাহলে তারা ডোমজুড়ের এরকম অপরিচিত গলিপথ চিনলে কীভাবে? তবে কি দুষ্কৃতীরা ডাকাতির আগে এলাকায় রেইকি করে গিয়েছিলে? এই ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে কি স্থানীয় কোনও দুষ্কৃতীরও যোগ রয়েছে? এইসব প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, গয়নার দোকানে ডাকাতির সময় এক রাউন্ড গুলিও চালায় দুষ্কৃতীরা। অল্পের জন্য কারও সেই গুলি লাগেনি। সেই গুলির খোলও উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। দুষ্কৃতীরা বাইক নিয়ে চম্পট দিয়ে এ রাজ্যেই কোথাও রয়েছে না ভিনরাজ্যে চলে গিয়েছে তা সবটাই জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখার পাশাপাশি গাড়িগুলিতে নাকা চেকিং ও রাজ্যের সব থানাকে সতর্ক করা হয়েছে। এই ঘটনার তদন্তে ভিনরাজ্যেও যাচ্ছে একাধিক তদন্তকারী দল।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার ডোমজুড়ের যেখানে ডাকাতির ঘটনাটি ঘটে সেখান থেকে কিছুটা দূরে ডোমজুড় থানার উল্টোদিকে ২০১৮ সালেও একটি সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিলো। সেই ঘটনায় পুলিশ উত্তরপ্রদেশ থেকে একটি ডাকাতদলকে ধরে এনেছিলে। তার মামলা এখনও চলছে। এবারও সেরকম ভিনরাজ্যের কোনও ডাকাতদল ধরা পড়ে কি না সেদিকেই তাকিয়ে এলাকার ব্যবসায়ী থেকে বাসিন্দারা সকলেই। নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা এলাকার স্বর্ণব্যবসায়ী থেকে বাসিন্দারা প্রত্যেকেই চাইছেন দ্রুত ধরা পড়ুক দুষ্কৃতীরা।