সংগ্রাম সিংহ রায় ও অরূপ বসাক: ফের বিভাজনের রাজনীতির হাওয়ায় উত্তপ্ত পাহাড়। মুখ্যমন্ত্রীকে সমর্থনের বার্তা দিয়েছেন প্রায় সাড়ে তিন বছর পর আত্মপ্রকাশ করা বিমল গুরুং (Bimal Gurung)। বিজেপিকে বিশ্বাসঘাতক এবং বিনয় তামাংয়ের বিরুদ্ধেও হিংসাত্মক রাজনীতি করার অভিযোগ তুললেন তিনি। পালটা জবাব দিয়েছেন বিনয়ও। কোনওদিন বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে আপস করবেন না বলেই সাফ জানিয়েছেন তিনি।
জীবনের শেষ বিন্দু পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) সমর্থন জানাব। শিলিগুড়িতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানালেন সাড়ে তিন বছর পর আত্মপ্রকাশ করা মোর্চা নেতা বিমল গুরুং। আপাতত তিনি শিলিগুড়িতে রয়েছেন। তারই ফাঁকে তিনি জানান, অজ্ঞাতবাসের সময় সাড়ে তিন বছর তিনি কীভাবে কাটিয়েছেন। তিনি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে একাধিকবার দেখা করেছেন। এমনকি একটা সময়ে প্রায় রোজই তার দেখা হত বলেও তিনি দাবি করেছেন। মূলত ১১ জনজাতির তপসিলি উপজাতি স্বীকৃতি নিয়ে তাঁদের সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের মতবিরোধের কারণেই বিজেপিকে সমর্থনের রাস্তা থেকে সরে এসেছেন বলেও জানিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: বিধায়ককে না জানিয়ে বৈঠক! বালিতে পিকের টিমের সামনেই হাতাহাতি বৈশালীর অনুগামীর]
বিমল গুরুং জানান, মানুষের কাছে একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিজেপিকে (BJP) সমর্থনের দাবি জানিয়েছিলাম। তার অন্তত কয়েকটি পূরণ না হলে ফের কোন মুখে তাঁদের কাছে বিজেপির হয়ে ভোট চাইতে যেতে পারতাম। একথা বিজেপি নেতৃত্বকে জানালে তারা তা নিয়ে কোনও গুরুত্ব দেয়নি বলেও ক্ষোভ গুরুংয়ের। তাঁর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্তত ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দেননি। তিনি বলেন, “আমাদের উপর যেভাবে দিদি ভরসা রেখেছেন আমরাও তেমনই জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে তাঁর পাশে থাকব। শুধুমাত্র আগামী বিধানসভা নির্বাচন নয়। এই সম্পর্ক দীর্ঘমেয়াদী।” যদিও বিজেপি শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি প্রবীণ আগরওয়াল মনে করেন, বিমল গুরুংকে ভুল বোঝানো হয়েছে। তৃণমূল বিভাজনের রাজনীতি করছে।
তবে বিনয় গুরুংয়ের সঙ্গে বিরোধ তাঁর লেগেই রয়েছে। গুরুংয়ের অভিযোগ, “হিংসাত্মক আন্দোলন শুরু করেছিল বিনয়ই। তাঁকে সরিয়ে চেয়ার দখলই তাদের লক্ষ্য ছিল সেটা বুঝতে পারিনি। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী। পাহাড়ের উন্নয়নে বিশ্বাসী। এবং পর্যটনকে কেন্দ্র করে পাহাড়ের যে অর্থনীতি তাকে কখনোই নষ্ট করতে দিতে চাই না।” তার পালটা দিয়েছেন বিনয় তামাং (Binay Tamang)। তিনি বলেন, “বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে কোনওদিন সমঝোতা করব না।”