সুকুমার সরকার, ঢাকা: টিপ কাণ্ডের প্রতিবাদে গর্জে উঠল বাংলাদেশ (Bangladesh)। অভিযুক্তের কড়া শাস্তির দাবিতে রাজধানী ঢাকায় চলছে প্রতিবাদ মিছিল। এহেন পরিস্থিতিতে শিক্ষিকা ড. লতা সমাদ্দারকে লাঞ্ছনা ও অশালীন আচরণে অভিযুক্ত পুলিশকর্মী নাজমুল তারেককে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা শিবিরে জারি নতুন বিধিনিষেধ! মানবাধিকার সংগঠনের প্রশ্নের মুখে হাসিনা সরকার]
গত শনিবার টিপ পরার জন্য লতা সমাদ্দারের উপর হামলা চালায় পুলিশ কনস্টেবল নাজমুল তারেক। রাজধানী ঢাকার (Dhaka) ব্যস্ততম ফার্মগেটের সেজান পয়েন্ট বিল্ডিংয়ের সামনের এই ঘটনায় তোলপাড় গোটা বাংলা। তাঁরা বিচার দাবিতে রাস্তায় নেমে আসেন। বিস্তর লেখালেখি হয় সংবাদপত্র-সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। এমনকী জাতীয় সংসদে সংসদেও এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। জাতীয় সংসদে ক্ষোভপ্রকাশ করেন সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ সুবর্ণা মুস্তাফা। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের কোন সংবিধানে, কোন আইনে লেখা আছে যে একজন নারী টিপ পরতে পারবে না? এখানে হিন্দু, মুসলমান, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, এমনকি সে বিবাহিত না বিধবা, সেটা বিষয় নয়। একটি মেয়ে টিপ পরেছে। তিনি একজন শিক্ষক। রিকশা থেকে নামার পর দায়িত্বরত পুলিশ অফিসার ইভ টিজ করেছে। এর শাস্তি হওয়া উচিত।”
ইতিমধ্যে ওই ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। সোমবার সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিএমপি কমিশনার মহম্মদ শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, টিপ পরা নিয়ে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় শিক্ষক ড: লতা সমাদ্দারকে ‘কটুক্তি’র অভিযোগে কনস্টেবল নাজমুল তারেককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। কটুক্তির অভিযোগ তদন্তে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর আগে ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম সোমবার জানান, নাজমুল তারেককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ওই শিক্ষক যে জিডি করেছেন, তারও যথাযথ তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার।
রাজধানীর শের-ই-বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক (ওসি) উৎপল বড়ুয়া জানান, কনস্টেবল নাজমুল তারেক পুলিশের প্রটেকশন বিভাগে কর্মরত। এর আগে, টিপ পরায় পুলিশের হেনস্তার শিকার হওয়ার কথা জানিয়ে ঢাকার তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক লতা সমাদ্দার শনিবার শেরেবাংলা নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পুলিশের পোশাক পরা একজনের বিরুদ্ধে ‘ইভটিজিং’ এবং ‘প্রাণনাশের চেষ্টা’র অভিযোগ করা হয় ওই জিডিতে।