সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কথাতেই আছে ‘স্যাঁকরার ঠুকঠাক, কামারের এক ঘা’। এতদিন জম্মু-কাশ্মীরে কার্যত একতরফা আক্রমণ চালিয়ে গিয়েছে জঙ্গি সংগঠন ও বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলি। সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ায় এবার চরমতম পদক্ষেপ নিল কেন্দ্রীয় সরকার। কাশ্মীরে আত্মগোপন করে থাকা সমস্ত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অল আউট আক্রমণে নামল সেনা। কাশ্মীরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে সার্চ অপারেশন। পুলওয়ামা-সহ একাধিক জায়গায় চলছে গুলির লড়াই। সেনার গুলিতে খতম হয়েছে দুই জঙ্গি৷ আর তাতেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, আবারও কোনও সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের প্রস্তুতি নিচ্ছে সেনা?
[বুখারি হত্যার নজিরবিহীন প্রতিবাদে কাশ্মীরি সংবাদমাধ্যম]
সূত্রের খবর, বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের ঘোষণার ঠিক আগেই সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের বাসভবনে গিয়েছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল৷ এরপরেই তিনি ও অন্তর্বর্তী নিরাপত্তা সচিব রিনা মিত্র যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বাসভবনে৷ সেখানেও খানিকক্ষণ চলে গোপন বৈঠক৷ দুই বৈঠকে ঠিক কি আলোচনা হয়েছে তা খোলসা করে প্রকাশ্যে আসেনি৷ তবে এর থেকেই তৈরি হয়েছে আবারও সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের প্রবল আশঙ্কা৷ এই পরিস্থিতির সঙ্গে অনেকেই মেলাতে চাইছেন ২০১৬-র সেপ্টেম্বরে উরি হামলার পরবর্তী সময়কালকে৷ তখনও গোপনে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে গোপন বৈঠক সেরেছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল৷ তারপরেই ২৩ সেপ্টেম্বর উরি হামলার ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ঢুকে জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করে এসেছিল ভারতীয় প্যারাকমান্ডো বাহিনী৷ জানা গিয়েছে, রাজ্যপাল শাসন বা রাষ্ট্রপতি শাসন জারির আগে ইতিমধ্যেই জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের শীর্ষ পদে রদবদল বড়সড় ঘটানো হয়েছে৷
[চাপে পড়ে ইস্তফা মেহবুবা মুফতির, কাশ্মীরে রাজ্যপাল শাসন]
মঙ্গলবার দুপুরেই কাশ্মীরের ক্ষমতায় থাকা পিডিপি বা পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির উপর থেকে সমর্থন তুলে নিয়েছে কেন্দ্রের ক্ষমতায় থাকা বিজেপি সরকার। ইতিমধ্যেই, মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি। বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, কেন্দ্রের সাহায্য পাওয়া সত্ত্বেও কাশ্মীরে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছে সরকার৷ সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরেই পিডিপির সঙ্গে মতানৈক্য তৈরি হয়েছিল জোটসঙ্গী বিজেপির৷ বিশেষ করে জঙ্গি দমন ইস্যুতে৷ যেখানে আপসের রাস্তায় হাঁটার পক্ষপাতী ছিল পিডিপি, সেখানে বরাবরই কড়া অবস্থান ছিল কেন্দ্রের৷ এই মতানৈক্য প্রকট হয় সম্প্রতি, যখন কেন্দ্রের কাছে শর্তসাপেক্ষে জঙ্গি দমন অভিযান আরও কয়েকদিন বন্ধের অনুরোধ জানায় কাশ্মীরের মেহবুবা মুফতি সরকার৷ কিন্তু তা অগ্রাহ্য করে রমজান মাস শেষ হতেই কাশ্মীরে জঙ্গি দমন অভিযান শুরুর নির্দেশ দেয় নয়াদিল্লি৷
The post বিজেপি-পিডিপি বিচ্ছেদ হতেই উপত্যকায় জঙ্গি দমনে অল আউট অভিযানে সেনা appeared first on Sangbad Pratidin.