ধীমান রায়, কাটোয়া: দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান। শনিবারই দেশজুড়ে শুরু হয়েছে করোনার টিকাকরণ (Vaccination)। বাংলায় ২০৭টি কেন্দ্রে টিকা পান চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া ও ভাতারে করোনা টিকাকরণ কর্মসূচির প্রথম দিনেও ছবিটা ছিল একইরকম। তবে তাল কাটল স্থানীয় তৃণমূল বিধায়কদের টিকাকরণে। চিকিৎসক কিংবা স্বাস্থ্যকর্মী না হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে টিকা পেলেন তাঁরা, তা নিয়েই সুর চড়িয়েছে বিজেপি। তবে টিকা প্রাপকদের দাবি, রোগীকল্যাণ সমিতির সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় টিকা নিয়েছেন তাঁরা।
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ১০০ জনকে এদিন টিকা দেওয়া হয়। তাঁরা প্রায় সকলেই স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত। পাশাপাশি কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় এদিন করোনার টিকা নেন। অন্যদিকে, শনিবার সকাল থেকেই ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে করোনা (Coronavirus) টিকাকরণের জন্য ব্যস্ততা লক্ষ্য করা যায়। এদিন ভাতার হাসপাতালে ১০০ জনকে টিকা দেওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন ভাতারের বিধায়ক, প্রাক্তন বিধায়ক, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সংঘমিত্রা ভৌমিক, পূর্ব বর্ধমান জেলাপরিষদের বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ জহর বাগদি, ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ মহেন্দ্র হাজরা প্রমুখ। উপস্থিত জনপ্রতিনিধিদের সকলে প্রথম দিনেই টিকা নেন।
ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে প্রথম দফায় মোট ১৬৩৬ ডোজ টিকা এসেছে। ধাপে ধাপে তালিকাভুক্তদের দেওয়া হবে। পূর্ব বর্ধমান জেলার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাটোয়া শহর এলাকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে একসময় বেড়েছিল। চিকিৎসক থেকে হাসপাতাল কর্মী এমনকী পুরকর্মীদের অনেকেই করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। স্বভাবতই সাধারণ মানুষদের মধ্যে করোনা নিয়ে এখনও আতঙ্ক রয়েছে। তাই টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হওয়ায় খুশি স্থানীয়রা।
[আরও পড়ুন: আলিপুরদুয়ারে প্রথম করোনা টিকা প্রাপকদের তালিকায় বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী! তুমুল বিতর্ক]
বিজেপির দাবি, কোভিড টিকাকরণের বিধি লঙ্ঘন করেছেন স্থানীয় বিধায়করা। শুধুমাত্র রাজনৈতিক ক্ষমতাবলে তাঁরা প্রথম দফায় করোনা ভ্যাকসিন নিয়েছেন বলেও অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন টিকাপ্রাপক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, মহেন্দ্র হাজরা, বনমালি হাজরা, বাসুদেব যশ এবং জহর বাগদি। জানান, তাঁদের নামও করোনার টিকাকরণের তালিকায় ছিল। কারণ, তাঁরা প্রত্যেকেই হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির সদস্য। এ বিষয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায়ের গলাতেও একই সুর। তিনি বলেন, “ওঁরা প্রত্যেকেই কোনও না কোনও হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির সদস্য। হাসপাতালের সুখে-দুঃখে থাকেন। ওঁরা করোনার টিকা পেতেই পারেন।”