সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভা ভোটের মুখে কংগ্রেসের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ‘তালা’ দিয়েছে মোদি সরকারের আয়কর দপ্তর। অন্যদিকে নির্বাচন দিন ঘোষণার পর আবগারি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন আপ প্রধান তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। অথচ জামিনে মুক্ত হয়ে রাজসাক্ষী বনে গিয়েছেন আবগারি মামলায় ইডির প্রথম গ্রেপ্তার পি শরৎচন্দ্র রেড্ডি। অভিযোগ, গ্রেপ্তার হওয়ার পরে নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে বিজেপিকে কোটি কোটি টাকা চাঁদা দেওয়াতেই ইডি তাঁর জামিনের বিরোধিতা করেনি। সত্যিই কি এমনটা ঘটেছিল?
নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত সাম্প্রতিক যে তথ্যে প্রকাশ্যে এনেছে, তাতে জানা গিয়েছে, অরবিন্দ ফার্মা নামক ওষুধ সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর পি শরৎচন্দ্র রেড্ডি নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে ৫২ কোটি টাকা চাঁদা দিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে। এর মধ্যে ৬৬ শতাংশ চাঁদা পড়েছে বিজেপির ঘটে। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে আবগারি দুর্নীতির মামলায় ইডি গ্রেপ্তার করেছিল রেড্ডিকে। এর ঠিক পাঁচ দিন পর অরবিন্দ ফার্মা ৫ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড কিনে বিজেপির তহবিলে জমা করে। এরপর কোমরে ব্যথার কারণ দেখিয়ে দিল্লি হাই কোর্টে জামিনের আবেদন করেন রেড্ডি। ইডি জামিনের বিরোধিতা করেনি। এমনকী পরের বছর রাজসাক্ষী বনে যান ওষুধ ব্যবসায়ী। অন্যদিকে আরও ২৫ কোটি টাকা বিজেপির তহবিলে জমা করে অরবিন্দ ফার্মা।
[আরও পড়ুন: ৫৬ ভোগ থেকে ফুলের আবির, ৫০০ বছর পর রামলালার সঙ্গে হোলি খেলতে প্রস্তুত অযোধ্যা]
অর্থাৎ শরৎচন্দ্র রেড্ডির অরবিন্দ ফার্মা নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে সব মিলিয়ে ৩০ কোটি টাকা চাঁদা দিয়েছে বিজেপিকে। বিজেপি ছাড়াও ভারত রাষ্ট্র সমিতি এবং তেলুগু দেশম পার্টিকে চাঁদা দিয়েছে তাঁরা। তবে অর্থের পরিমাণ অনেকটাই কম। রেড্ডির আরও এক সংস্থাও বিজেপিকে চাঁদা দিয়েছে। ঠিক এই কারণেই প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা, বিজেপিকে কোটি কোটি টাকা চাঁদা দেওয়াতেই জামিনে মুক্ত এবং রাজসাক্ষী রেড্ডি? এমনকী রাজসাক্ষী হিসেবে রেড্ডির বিবৃতিকেই অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে কাজে লাগিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট।
এই ঘটনাকে সামনে রেখে শনিবার আপ নেতা এবং দিল্লির শিক্ষামন্ত্রী অতীশি অভিযোগ করেন, শরৎ রেড্ডির ঘটনাতে স্পষ্ট যে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ক্ষমতাসীন বিজেপির নির্দেশেই কাজ করছে। নির্বাচনে স্বচ্ছতার পক্ষে আন্দোলনকারী অঞ্জলি ভরদ্বাজ এ নিয়ে দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্ন তুলেছেন।
[আরও পড়ুন: কেজরির গ্রেপ্তারির প্রতিবাদ, একযোগে বিরাট কর্মসূচি ইন্ডিয়া জোটের]
উল্লেখ্য, নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য বলছে, রেড্ডির অরবিন্দ ফার্মা মোট ৫২ কোটি টাকার বন্ড কিনেছিল। তার মধ্যে ৩৪.৫ কোটি টাকাই বিজেপির তহবিলে জমা পড়ে। রেড্ডির অন্য সংস্থা এপিএল হেলথকেয়ার ১০ কোটি টাকার বন্ড কিনেছিল। তার পুরোটাই বিজেপির অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। সব মিলিয়ে আবগারি দুর্নীতির অন্যতম অভিযুক্ত থেকে রাজসাক্ষী হয়ে যাওয়া রেড্ডি বিজেপিকে ৪৪.৫ কোটি টাকা চাঁদা দিয়েছিলেন।