সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের বেসুরো একুশের বিধানসভা ভোটে উত্তরপাড়ার বিজেপি প্রার্থী প্রবীর ঘোষাল। তৃণমূলের ‘মুখপত্র জাগো বাংলা’য় নিজের দলের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। বিজেপিতে কাজ করার চেয়ে টাকা চাওয়ার লোক বেশি বলে দাবি করেছেন তিনি। তাঁর এমন মন্তব্যে নতুন করে অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির।
২০১৬-য় উত্তরপাড়া কেন্দ্রে জিতে তৃণমূল বিধায়ক হয়েছিলেন প্রবীর। কিন্তু একুশের বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল থেকে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন তিনি। চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে বিজেপির পতাকা হাতে তুলে ছিলেন। তবে উত্তরপাড়া আসনে বিজেপির টিকিটে দাঁড়িয়ে হেরে যান। আর সেই নির্বাচনের অভিজ্ঞতাই এদিন জাগো বাংলার উত্তর সম্পাদকীয়তে তুলে ধরেছেন সাংবাদিক তথা প্রাক্তন বিধায়ক। তিনি লিখেছেন, “আমার কিছু শুভানুধ্যায়ী জিজ্ঞাসা করেছিল, বিজেপি করতে পারবি তো? এদের কী নিম্নমানের রুচি দেখেছিস? তাদের প্রশ্ন তোলার সঙ্গত কারণ ছিল।” এরপরই যোগ করেন, “তখন বুঝতে পারিনি বিজেপির ভিতরটা কতটা নরকগুলজার হয়ে আছে। অবশ্য নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে এসেছে, ততই পদ্মফুলের কদর্য কাজিয়ার চেহারাটা গোটা রাজ্য জুড়ে বেআব্রু হয়ে পড়েছে।” শুধু তাই নয়, পদ্মশিবিরে কাজের তুলনায় টাকা চাওয়ার লোকের সংখ্যাই বেশি বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: তল্লাশির নামে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ‘দুর্ভাগ্যজনক’, উদয়ন গুহর মন্তব্যের পালটা জবাব বিএসএফের]
বুধবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েও বিজেপিকে একহাত নেন বিজেপি প্রার্থী প্রবীর ঘোষাল (Prabir Ghoshal)। বলে দেন, “দলের মধ্যে এত বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হবে, ভাবতে পারিনি। অনেক স্বপ্ন দেখেছিলাম, দেখানো হয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়নের সুযোগ দেওয়া হয়নি। বিজেপি কোনও রাজনৈতিক দলই নয়। বিজেপির দুর্বলতার জায়গাগুলো, আমাদের কাজ করতে কোথায় অসুবিধা হয়েছে- সবই ব্যাখ্যা করেছি। নির্বাচনে যা দেখেছি, সেটাই লিখেছি। বিজেপির ভিতরকার অবস্থা এত খারাপ, ভোটে না দাঁড়ালে বুঝতে পারতাম না।” এমনকী এও জানান, ভোটে দাঁড়ানোর জন্য টাকা পেয়েছিলেন। তবে তা পর্যাপ্ত ছিল না।
তবে কি বিজেপি (BJP) ছেড়ে শাসকদলেই ফিরতে চাইছেন? প্রবীর ঘোষালের কথায়, “মানসিকভাবে বিজেপিতে আমি নেই। তবে এখনই তৃণমূলে যাচ্ছি না। আপাতত লেখালিখি নিয়েই থাকতে চাই। সময় ও পরিস্থিতি বলবে কী সিদ্ধান্ত নেব। তবে আজকের খবরের কাগজ দেখে তৃণমূলের তরফে অনেকেই ফোন করেছেন।” তাঁর এই মন্তব্যেই দলবদলের জল্পনা আরও জোরাল হল। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করে তৃণমূলে ফেরার পথ প্রশস্ত করে রাখলেন তিনি। বলেন, “মাতৃবিয়োগের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহানুভূতি জানিয়েছিলেন। কিন্তু বিজেপির বড় নেতারা ফোনও করেননি। মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়ন নিয়েও কোনও প্রশ্নই ওঠে না। তবে এখনও তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব পাইনি। আর এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তও নিইনি।”
[আরও পড়ুন: ‘আগামী দিনে দেশ নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে’, সংসদীয় ব্যবস্থাকে মজবুত করার বার্তা মোদির]
যদিও এই প্রথমবার নয়, এর আগেও দলে থেকেই বিজেপির সমালোচনা করেছিলেন তিনি। বিজেপির বড় নেতারা যে তাঁর কোনও খোঁজ রাখেন না, সে নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন।