রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: থানায় ঢুকে পুলিশকে হুমকি শুভেন্দু অধিকারীর। বিজেপি নেতাকে গ্রেপ্তারির পালটা অপহরণের মামলার হুঁশিয়ারি রাজ্যের বিরোধী দলনেতার। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার রাতে রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পূর্ব মেদিনীপুরের মারিশদা থানা চত্বর।
শুভেন্দু অধিকারী জানান, শনিবার বাঁশগোড়াতে সভা ছিল শুভেন্দু অধিকারীর। তার আগে বিকাল চারটে নাগাদ সেখানকার মণ্ডল কমিটির সম্পাদক যুব নেতা রবীন মান্নাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দীর্ঘ ৫ ঘন্টা ওই বিজেপি নেতার কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি বলেই দাবি বিরোধী দলনেতার। রাত প্রায় ১০টা নাগাদ মারিশদা থানায় থাকা কয়েকজন বিজেপি সমর্থক তাঁকে মেসেজ করে বলেই দাবি শুভেন্দুর। জানানো হয়, মারিশদা থানাতেই রয়েছেন বিজেপি নেতা রবীন মান্না। সে খবর পাওয়ার পরই থানায় যান শুভেন্দু।
[আরও পড়ুন: ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ভাইরালের হুমকি, খুনের পর দেওরের মৃতদেহের পাশে রাত কাটাল বউদি!]
থানায় ঢুকে রীতিমতো তাণ্ডব চালাতে শুরু করেন শুভেন্দু অধিকারী। কর্তব্যরত ডিউটি অফিসারের কাছে যুব নেতার অ্যারেস্ট মেমো দেখতে চান। এই নিয়ে পুলিশের সঙ্গে রীতিমতো বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন শুভেন্দু। সেই সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন খেজুরির বিজেপি বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক-সহ ধৃত বিজেপি নেতার পরিজন ও একঝাঁক বিজেপি সমর্থক। শুভেন্দু আসার খবরে মারিশদা থানার বাইরে ক্রমশ ভিড় জমাতে থাকেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা।
পুলিশকে তিনি রীতিমতো ধমকের সুরে সুপ্রিম কোর্টের একাধিক নির্দেশ ও আইনের বিভিন্ন ধারার উল্লেখ করে বিজেপি নেতার গ্রেপ্তারি বেআইনি আখ্যা দেন। সরাসরি পুলিশকে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, “আপনি সুপ্রিম কোর্টের আইন অমান্য করে ক্রিমিনাল প্রসিডিওর ভায়োলেট করেছেন। আমি বিজেপি নেতার স্ত্রীকে দিয়ে এখনই অপহরণের অভিযোগ দায়ের করব।” তার পালটা হিসাবে পুলিশকে কিছুই বলতে দেননি বিরোধী দলনেতা। পরিবর্তে পুলিশকর্মীদের রীতিমতো ধমক দিয়ে শুভেন্দুর মন্তব্য, “ডোন্ট ডিকটেট মি, ডিউটি অফিসার আমাকে বলুন। সিভিল ড্রেসে গিয়ে বাড়ির লোকের সই ছাড়া তুলে এনেছে। অ্যারেস্ট করেছে ৪টের সময়, এখন রাত সাড়ে ১০টা বাজে। আমি অ্যারেস্ট মেমো চেয়েছি। সেটা দিতে সাড়ে ৬ ঘন্টা লাগে নাকি। ডিউটি অফিসার আর ওসি ইনচার্জের বিরুদ্ধে মামলা করব।”
শুভেন্দুর মন্তব্য, “আমি রবিবার কাঁথি আদালতে অপহরণের মামলা দায়ের করব ধৃত নেতার স্ত্রীকে দিয়ে। সোমবার কলকাতা হাই কোর্ট খুললে সেখানে আমি রিট পিটিশন দাখিল করব।” পুলিশ আধিকারিকের উদ্দেশে তাঁর হুঁশিয়ারি, “এই মামলাটি অনেক দুর যাবে।” হুমকি দেওয়ার পর শুভেন্দু থানার বাইরের বেঞ্চে বেশ কিছুক্ষণ বসেছিলেন। তবে পুলিশের তরফে কোনও কাগজপত্র দেওয়া হয়নি। নথিপত্র না পেয়ে অবশেষে তিনি মারিশদা থানা ছেড়ে চলে যান। যাওয়ার আগে পুলিশকে হুঁশিয়ারি, “আপনারা আইপিসি, সিআরপিসি মানেন না। আপনাদের সঙ্গে তাহলে আদালতেই আমার দেখা হবে।” যদিও গোটা ঘটনায় পুলিশের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
দেখুন ভিডিও: