সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেষবেলার প্রচারে রাজ্যজুড়ে ঝড় তুলছে বিজেপি। প্রথম দফার প্রচারের শেষ দিনে বিজেপির হিন্দুত্বের পোস্টার বয় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ একের পর এক সভা করে চলেছেন। আর গেরুয়া লাইনেই যে তিনি ‘খেলবেন’ তা প্রচারের প্রথম দিন থেকেই বুঝিয়ে দিয়েছেন। সেই পথেই তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা থেকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন। বাংলার সংস্কৃতির কথা তুলে যোগী বলেন, স্বামী বিবেকানন্দ, চৈতন্যদেব যে গেরুয়া পরে বিশ্বের কাছে বাংলার মাথা উঁচু করেছিলেন সেই গেরুয়া দেখলেই এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেগে যান।
বাংলার শিল্প, কর্মসংস্থান, দুর্নীতি, তোলাবাজির মতো বিষয়গুলি যে বিজেপির নির্বাচনী প্রচারের মূল অ্যাজেন্ডা, তা প্রচারে এসে বারবার বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহরা। কিন্তু সেই সঙ্গে বিজেপির বহু পরীক্ষিত গেরুয়া লাইনও যে থাকছে তাও বারবার স্পষ্ট হয়েছে। নামখানা থেকে গেরুয়া প্রসঙ্গ-সহ সব ইস্যুকেই তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে হাতিয়ার করলেন যোগী। বাংলার সংস্কৃতি তুলে ধরতে গিয়ে যোগী, বিবেকানন্দ, চৈতন্যদেব, নেতাজি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কেও টেনে আনেন।
যোগী বলেন, বাংলার মাটি সংস্কৃতির মাটি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাত ধরে দেশে প্রথম নোবেল আসে। বাংলার মাটি বিপ্লবের মাটি। এই মাটির সন্তান নেতাজি ডাক দিয়েছিলেন, তোমরা আমায় রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব। নেতাজি শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় স্বাধীনতার স্ফুলিঙ্গ জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন। এমনকী বঙ্কিমচন্দ্রের বন্দেমাতরম শুনে হাজার হাজার যুবক স্বাধীনতা আন্দোলনে ঝাঁপাতে উদ্বুদ্ধ হতেন। হাসতে হাসতে ফাঁসিতে ঝুলে যেতেন। আর গেরুয়া প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করতে গিয়ে যোগী বলেন, “বাংলার সন্তান স্বামী বিবেকানন্দ শ্রীচৈতন্যদেব বাংলার সংস্কৃতিকে বিশ্বের মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাঁরাও গেরুয়া পরেই বিশ্বের দরবারে বাংলার মাথা উঁচু করেছিলেন। আর মমতা দিদি এখন এই গেরুয়াকেই সহ্য করতে পারেন না।”
[আরও পড়ুন: শিয়রে ভোট, এবার জেড ক্যাটেগরির নিরাপত্তা মুকুল রায়কে]
কর্মসংস্থান শিল্প দুর্নীতি প্রসঙ্গেও মমতা সরকারকে আক্রমণ করেন যোগী। তাঁর দাবি, বাংলা একসময় শিল্পে দেশের মধ্যে এগিয়ে থাকা রাজ্য ছিল। কিন্তু প্রথমে কংগ্রেস তার পর কমিউনিস্ট এবং শেষ ১০ বছর তৃণমূল সরকার সব কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। এর পরই যোগী দাবি করেন, আর কিছুদিন পরেই বিজেপির সরকার আসছে বাংলায়। তৃণমূলকে উলটো গোনা শুরু করে দিতে হবে। তোলাবাজিতে যুক্ত তৃণমূলের লোকজনকে খুঁজে খুঁজে জেলে পোরা হবে। যারা কেন্দ্রের পাঠানো টাকা জনগণের হাতে পৌঁছতে দেয়নি, কোনও উন্নয়ন করেনি তাদের কাউকে ছাড়া হবে না।
[আরও পড়ুন:‘আজসুর চিহ্নই আমাদের চিহ্ন’, পুরুলিয়ায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটানোর চেষ্টায় শাহ]