রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: নিচুতলায় সংগঠনের শোচনীয় অবস্থা। যেখানে সংগঠন দুর্বল, প্রার্থী দেওয়ার ক্ষমতা নেই, সেখানে পঞ্চায়েত ভোটে নির্দলদের সমর্থনের কৌশল নিচ্ছে রাজ্য বিজেপি (BJP)। শুধু তাই নয়, দিল্লির নেতৃত্বের কাছে নিজেদের মানসন্মান বাঁচাতে নিজেদের লড়াই দেওয়ার ক্ষমতা যেখানে নেই সেখানে তৃণমূলকে হারাতে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেস (Congress) বা বাম প্রার্থীকেও গোপনে সমর্থনের পথেও হাঁটবে দল।
আসন্ন গ্রামীণ ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জীর্ণ গেরুয়া শিবির পঞ্চায়েত প্রস্তুতি বৈঠকে এমনই পরিকল্পনা করে এগোতে চাইছে। বিজেপি নেতারা বারে বারে অভিযোগ করেন যে, তৃণমূলকে (TMC) সাহায্য করছে সিপিএম (CPIM)। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলকে আটকাতে নিচুতলায় বাম আর রামের অলিখিত জোট হতে চলেছে বহু জায়গায়। রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষ নেতা এই বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে এদিন বলেন, “যেখানে প্রার্থী দেওয়ার শক্তি নেই সেখানে বাম-কংগ্রেসকে সমর্থনেও অরুচি নেই আমাদের।” বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা যখন বলছেন কংগ্রেস মুক্ত ভারতের কথা। আবার সিপিএম (CPIM) যখন দাবি করে আসছে তাদের মূল শত্রু বিজেপি। তখন বাংলায় তৃণমূলকে আটকাতে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে নিচুতলায় বাম-কংগ্রেসকে সমর্থনের পথে যাওয়াটা দলের নীতি-আদর্শের বিরোধী বলে মনে করছে বঙ্গ বিজেপির বিক্ষুব্ধ শিবির।
[আরও পড়ুন: পাকিস্তান ম্যাচ অতীত, এশিয়া কাপে আজ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টিকে থাকার লড়াই রোহিতদের]
এদিকে, অধিকাংশ জেলা ও মণ্ডল পঞ্চায়েত সাব কমিটিই এখনও তৈরি করা যায়নি বলে দলীয় সূত্রে খবর। পঞ্চায়েত ভোটের আগে যা ভাবাচ্ছে রাজ্য নেতাদের। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে মঙ্গলবার দলের রাজ্য দপ্তরে বৈঠকে বসে বিজেপি নেতৃত্ব। পঞ্চায়েত নির্বাচনী সমন্বয় কমিটির ইনচার্জ সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী, কো-কনভেনর সাংসদ সৌমিত্র খাঁ, বিধায়ক দীপক বর্মন-সহ কমিটির অন্যান্য সদস্যরা ছিলেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে পাঁচটি জোনের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে নেতৃত্বকে। উত্তরবঙ্গ জোন-সহ পুরোটাই নজরদারি করবেন দেবশ্রী চৌধুরী। রাড়বঙ্গ জোনের দায়িত্বে সৌমিত্র খাঁ। হাওড়া-মেদিনীপুর জোনে সাংসদ জগন্নাথ সরকার, কলকাতা জোনের দায়িত্বে দীপক বর্মন। নবদ্বীপ জোন দেখবেন শ্যামাপদ মণ্ডল।
[আরও পড়ুন: ইডেনে একসঙ্গে দেখা যেতে পারে কপিল-সৌরভ-ধোনিকে, জাতীয় সঙ্গীত গাইতে পারেন অমিতাভ]
এছাড়া, দলের ৪২টি সাংগঠনিক জেলার দায়িত্ব ৪২ জনকে দেওয়া হয়েছে। আগের পঞ্চায়েত নির্বাচনে যারা জয়ী হয়েছিলেন তাঁদের সকলকেই প্রার্থী করা হবে। এছাড়াও, নতুন প্রার্থী খুঁজতে বলা হয়েছে। প্রার্থী তালিকায় পুরনোদের গুরুত্ব দেওয়া হবে। নতুন যারা দলে এসে লাফালাফি করছে তাদেরকে বেছে তবেই প্রার্থী করা হতে পারে। দেবশ্রী চৌধুরীর অবশ্য দাবি, জেলা-মণ্ডল সমন্বয়ে টিম তৈরি হয়েছে। সংখ্যালঘু এলাকায় কোনও কমিটিই তৈরি করতে পারা যায়নি। তাই সেইসব এলাকায় ভোট প্রস্তুতি শুরু করা যাচ্ছে না। সাংসদ সৌমিত্র খাঁ’র দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভাল ফল করবে বিজেপি। সংখ্যালঘু এলাকায় প্রার্থী না দেওয়া গেলে নির্দলকে সমর্থন করা হবে।