জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: ফের প্রকাশ্যে বিজেপির (BJP) বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার অন্তর্দ্বন্দ্ব। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা বিজেপি সভাপতি রামপদ দাসের ডাকা বনগাঁ পৌরসভার ভোটপ্রস্তুতির বৈঠকে গরহাজির বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক (MLA) অশোক কীর্তনীয়া ও জেলা নেতা দেবদাস মণ্ডল। তাঁদের এই ভূমিকায় ক্ষুব্ধ বিজেপির একাংশই। এ নিয়ে দলের অন্দরেই নানা সমালোচনা শুরু হয়েছে।
সামনে পৌরসভা ভোট। তার প্রস্তুতি তুঙ্গে সব রাজনৈতিক শিবিরে। বুধবার সন্ধ্যায় বনগাঁর (Bongaon) গান্ধীপল্লির জেলা পার্টি অফিসে বনগাঁ পৌরসভার ২২ টি বুথের নেতাকর্মীদের নিয়ে বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। বৈঠক ডেকেছিলেন বনগাঁ বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি রামপদ দাস। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে বনগাঁ পৌরসভা এলাকার একাধিক নেতা, কর্মী হাজির থাকলেও দেখা মেলেনি বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক, পৌরসভার বাসিন্দা অশোক কীর্তনীয়া ও জেলা নেতা দেবদাস মণ্ডলকে। তাঁদের অনুপস্থিতি নিয়ে বৈঠকের আহ্বায়ক রামপদ দাস বিশেষ কিছু বলতে চাননি। তাঁর মন্তব্য, “পৌরসভা ভোটের প্রস্তুতি সভায় পৌর এলাকার বাসিন্দা দলের নেতা, কর্মীরা এসেছেন। বিধায়কের অনেক কাজ থাকে। হয়ত ব্যস্ত আছেন, সেই কারণে আসেননি।দেবদাস মণ্ডলকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: মিলল সুবিচার, বোলপুরের ছোট্ট মেয়ের সাক্ষীতে ২০ বছর জেল মায়ের ধর্ষকদের!]
দলের বৈঠকে অনুপস্থিতি নিয়ে অবশ্য বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া বা দেবদাস মণ্ডল এখনও কোনও বক্তব্য পেশ করেননি। পৌরভোটকে কেন্দ্র করে বৈঠকে পৌর এলাকার একাধিক নেতা-কর্মীরা উপস্থিত না হওয়ায় ক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য, বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে। তার মধ্যেই সম্প্রতি বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বদল করে রামপদ দাসকে সভাপতি করা হয়েছে। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ শান্তনু ঠাকুর-সহ একাধিক বিজেপি বিধায়ক, নেতা, কর্মীরা। ফলে দল এখন দ্বিধাবিভক্ত।
[আরও পড়ুন: রক্ষকই ভক্ষক! রাতের কলকাতায় গাড়িচালককে মারধর করে ‘লুট’, গ্রেপ্তার সিভিক ভলান্টিয়ার]
দিন কয়েক আগে ঠাকুরবাড়িতে বৈঠক করে দলের কাছে সভাপতি বদলের দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু এখনও দল সভাপতি বদলের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি। সোমবার গোপালনগরে শান্তনু ঠাকুরের উপস্থিতিতে বনভোজনে হয়। সেই বনভোজনে শান্তনু ঘনিষ্ঠ নেতা-কর্মীদের দেখা গেলেও দেখা মেলেনি রামপদদের৷ বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া, দেবদাস মণ্ডল এমনিতে শান্তনু ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। সেই কারণেই রামপদ দাসের ডাকা পুরভোটের প্রস্তুতি বৈঠকে আসেননি শান্তনু ঘনিষ্ঠরা, এমনই অনুমান দলের অন্যান্য নেতা-কর্মীদের।
গেরুয়া শিবিরের এই অন্তর্দ্বন্দ্বকে কটাক্ষ করেছে বনগাঁর জেলা তৃণমূল সভানেত্রী আলোরানি সরকার। তাঁর মন্তব্য, ”ওরা আতঙ্কিত। প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না। তার উপর আবার গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে। বনগাঁয় ওদের লোকজনও নেই। সেই কারণে অশোক কীর্তনীয়া এবং জেলার এক নেতা বৈঠকে উপস্থিত হননি।”