দেবব্রত দাস, খাতড়া: বর্ষশেষে বাঁকুড়ায় পর্যটকের ভিড়। বহু মানুষ ছুটি কাটাতে ভিড় জমিয়েছেন মুকুটমণিপুরে। এই পরিস্থিতিতে ডেরা বদল করে বাঘিনী জিনাতও পৌঁছে গিয়েছে মুকুটমণিপুরের কংসাবতী জলাধারের কোল ঘেঁষা রানিবাঁধ ব্লকের বন পুকুরিয়া ডিয়ার পার্কের কাছে গোপালপুর এলাকায়। আতঙ্কিত পর্যটকরা। কোনও বিপদ আটকাতে সতর্ক বনদপ্তর।
১৫ নভেম্বর, মহারাষ্ট্রের তাডোবা ও আন্ধেরি ব্যাঘ্রপ্রকল্প থেকে সিমলিপালে আনা হয় জিনাতকে। ২৮ নভেম্বর ঘরছাড়া হয়। ঝাড়খণ্ডে জামশেদপুর বনবিভাগ হয়ে চাকুলিয়ার জঙ্গলে আসে। বেলপাহাড়ির কাঁকরাঝোড় দিনদুয়েক ছিল বাঘিনী। তারপর ময়ূরঝর্ণা হয়ে রাইকা পাহাড়ে আসে। খাবার, জল, বাসস্থান অনুকূল থাকায় সেখানেই দিব্যি ছিল সে। তবে হাতি তাড়ানোর কৌশল অবলম্বন করেন বনদপ্তরের কর্মীরা। হুলাপার্টি, মশাল, পটকায় বিরক্ত হয়ে লোকালয়ে চলে যায় জিনাত। মানবাজারের ডাংরডির জঙ্গলে ছিল সে। তবে শুক্রবার রাতে জালের নিচ দিয়ে পালায় জিনাত। বর্তমানে মুকুটমণিপুরের কংসাবতী জলাধারের কোল ঘেঁষা রানিবাঁধ ব্লকের বন পুকুরিয়া ডিয়ার পার্কের কাছে গোপালপুরে রয়েছে সে।
কংসাবতী জলাধারের একদিকে মুকুটমণিপুর পর্যটন কেন্দ্র। জলাধারের অন্য পাড়ে বন পুকুরিয়া ডিয়ার পার্ক। তার পাশেই গোপালপুর, নারকোলি, পুড্ডি। লোকেশন ট্র্যাক করে পাওয়া বনদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জলাধারের অন্য পাড়ে রয়েছে বাঘিনী। বর্ষশেষে মুকুটমণিপুরে পর্যটকের ভিড়। এই পরিস্থিতিতে বাঘিনীর আনাগোনা স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক বাড়াচ্ছে। রাজ্যের মুখ্য বনপাল (দক্ষিণ পশ্চিম চক্র ) বিদ্যুৎ সরকার, বাঁকুড়ার ডিএফও দক্ষিণ প্রদীপ বাউড়ি, এডিএফও মধুরমিলন ঘোষ-সহ বনদপ্তরের আধিকারিক ও কর্মীরা ওই এলাকায় পৌঁছে গিয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিক, সুন্দরবন থেকে আসা শুটারের দল। ইতিমধ্যেই বনদপ্তরের তরফে আঁটসাঁট নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। বনদপ্তরের তরফে মাইকিং-ও করা হচ্ছে। জলাধার পেরিয়ে ডিয়ার পার্কে পর্যটকদের যেতে নিষেধ করা হয়েছে। 'বাঘবন্দি' কবে হবে, সেই প্রশ্নই এখন মুখে মুখে ঘুরপাক খাচ্ছে।