সুদীপ রায়চৌধুরী: বাংলার অতি পরিচিত একটি প্রবাদ – ‘চোরের উপর রাগ করে মাটিতে ভাত খাওয়া’। সেই প্রবাদ অনুযায়ীই বোধহয় বৃহস্পতিবার বিধানসভায় চিত্রনাট্য সাজাল বিরোধী দল। স্পিকারের উপর ‘রাগ’ করে তাঁর দেওয়া পেয়ারা গ্রহণ করলেন না বিজেপি বিধায়করা (BJP MLA)! গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, শুভেন্দু অধিকারীকে বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড করা, বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে জাতীয় সংগীত অবমাননা মামলা নিয়ে তাঁরা এতটাই ক্ষুব্ধ যে সৌজন্যটুকুও দেখালেন না। এই সমালোচনা শুরু হতেই বিরোধীদের উলটো কথা, সৌজন্য দেখাতে হলে আগে শাসকদলই দেখাক।
কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের (KIFF 2023) মঞ্চে অতিথিদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) পা মেলানো নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের ‘অশালীন’ মন্তব্যে আপাতত সরগরম রাজ্য রাজনীতি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিধানসভায় শুরুতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে অধিবেশন। একদিকে গিরিরাজ সিংয়ের ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে সরব হন তৃণমূল বিধায়করা (TMC MLA), অন্যদিকে, বিজেপির তরফেও জাতীয় সংগীত মামলা নিয়ে শোরগোল চলছিল। এই সময়ে শোরগোল থামাতে চেয়ে সৌজন্যের বার্তা দেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ঘোষণ করেন, বিধানসভার সমস্ত সদস্যের জন্য তিনি বারুইপুরের (Baruipur) বিখ্যাত পেয়ারা এনেছেন। সকলে যেন তা গ্রহণ করেন।
[আরও পড়ুন: টেটের দিনেই গীতাপাঠ, পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে বাড়তি বাসের ব্যবস্থা রাজ্যের]
এহেন উপহারের ঘোষণায় তখনকার মতো শোরগোল থেমে যায়। পরে স্পিকারের ঘরে গিয়ে শাসকদলের বিধায়করা পেয়ারা সংগ্রহ করেন। উল্লেখ্য, স্পিকার নিজে বারুইপুরের বিধায়ক। শীতের মরশুমে সেখানকার বিখ্যাত পেয়ারা তিনি সহকর্মীদের জন্য নিয়ে এসেছেন। কিন্তু সৌজন্য মেনে সেই উপহার গ্রহণ করা দূর অস্ত, পুরোপুরি খারিজ করে দিলেন বিজেপি বিধায়করা। শংকর ঘোষ, মনোজ টিগ্গাদের বক্তব্য, স্পিকার মিথ্যে মামলা করছেন বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে। শুভেন্দু অধিকারীকে অনৈতিকভাবে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সৌজন্য আগে ওদেরই দেখানো উচিত। কিন্তু বিজেপি বিধায়কদের ‘পেয়ারা’ বয়কটের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজনৈতিক মহলের একাংশের হাসাহাসি শুরু হয়েছে। শেষে কি না পেয়ারার উপরও রাগ!