সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোটের ফলপ্রকাশের পর রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত হিংসার ছবি প্রকাশ্যে আসছে। বেশিরভাগ জায়গায় দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হচ্ছেন বিজেপি (BJP) কর্মীরা। এমনকী নিজেদের গড়েও কর্মীদের সেভাবে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন তাবড় বিজেপি নেতারা। অন্তত প্রাথমিক খবরাখবরে তেমনই বোঝা যাচ্ছে। এবার সেই ব্যর্থতা ঢাকতে ইস্তফা দেওয়ার কথা শোনা গেল বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ তথা দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অর্জুন সিংয়ের (Arjun Sing) গলায়। মঙ্গলবার তিনি স্পষ্টই বললেন, জনপ্রতিনিধি হয়ে যদি সেই দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করা না যায়, তাহলে ইস্তফা দেওয়াই উচিত হবে। বোঝাই গেল, নিজেদের ব্যর্থতা এবার নিজেরাই উপলব্ধি করছেন।
রাজ্যের অশান্তিপ্রবণ বিভিন্ন জেলার মধ্যে অন্যতম উত্তর ২৪ পরগনা। সেখানেও ভোট পরবর্তী হিংসার রেশ ছড়িয়েছে। ভাটপাড়া, শ্যামনগর, জগদ্দলের মতো শিল্পাঞ্চল সবসময়েই রাজনৈতিক অশান্তিতে উত্তপ্ত থাকে। ভোট পূর্ববর্তী কিংবা পরবর্তী সময়ে তা আরও বেড়ে যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। সোমবার শ্যামনগরে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে এই রাজনৈতিক সংঘর্ষের মাঝে পড়ে। বিজেপির দাবি, তিনি এক দলীয় কর্মীর মা। এছাড়া আশেপাশে একাধিক জায়গায় ছোটখাটো অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। এসব দেখে এবার নিজের ভূমিকা নিয়ে চিন্তিত এলাকার বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি স্পষ্টই বললেন, ”এতজন জনপ্রতিনিধি আছে আমাদের দলে। এরপরও যদি মানুষকে নিরাপত্তা না দিতে পারি, তাহলে ইস্তফা দেওয়া উচিত। এ রাজ্যে গণতন্ত্র নেই, সন্ত্রাস চলছে চারদিকে।”
[আরও পড়ুন: তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে, উত্তপ্ত কেতুগ্রাম]
রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, একুশের বিধানসভা ভোটের ফলাফলে স্পষ্ট, আসলে নিজের এলাকাতেই সংগঠন সামলাতে পারছেন না দাপুটে অর্জুন সিং। একমাত্র ভাটপাড়ায় ছেলে পবন সিং জেতায় বিজেপির মুখরক্ষা হয়েছে। এছাড়া নোয়াপাড়া, জগদ্দল, নৈহাটির মতো শক্ত গেরুয়া ঘাঁটিতেও পদ্ম ফোটেনি। এমনকী বীজপুর কেন্দ্র থেকে মুকুল রায়ের ছেলে শুভ্রাংশুও জিততে পারেননি। এর জন্য বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে মুখ পুড়েছে অর্জুনেরই। তার উপর দলের নিচুস্তরের কর্মীদের উপর হামলা, তাঁদের পাশে থেকেও বরাভয় দিতে পারেননি সাংসদ। সবমিলিয়ে এবার নিজের দায় ঝেড়ে ফেলতে তাই ইস্তফার ভাবনা অর্জুন সিংয়ের। কিন্তু তাতেই কি জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব শেষ করে ফেলা সম্ভব? এই প্রশ্ন উঠছেই।