দীপঙ্কর মণ্ডল: দীর্ঘদিনের সঙ্গী, সহধর্মিণী আচমকাই একসঙ্গে পথ চলায় ইতি টেনে তাঁর নিজের রাজনৈতিক পথে পা বাড়িয়েছে। বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ’র (Soumitra Khan) স্ত্রী সুজাতা গেরুয়া শিবির ছেড়ে সোমবারই যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, সৌমিত্র খাঁ’ও আগামী দিনে আসতে পারেন তৃণমূলে। কিন্তু ঘণ্টাখানেক কাটতে না কাটতেই চিত্র বদল। তৃণমূলে যোগদান দূরের কথা, সাংবাদিক বৈঠক করে স্ত্রীর সিদ্ধান্তে ‘ব্যথিত’ সৌমিত্র তাঁকে বিবাহবিচ্ছেদের নোটিস পাঠানোর কথা ঘোষণা করলেন। রাজনীতির টানাপোড়েনে এবার সংসারও ভাঙার পথে।
এদিন বিজেপি অফিসে স্ত্রী হিসেবে সুজাতার কৃতিত্বের কথা বারবার স্মরণ করতে গিয়ে গলা কেঁপে গেল সৌমিত্র খাঁ’র। প্রেমের দিন থেকে আজ পর্যন্ত সঙ্গিনীর প্রতি অকুণ্ঠ কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পরও স্ত্রীর দলবদলের ব্যথা সামলাতে পারলেন না তিনি। বললেন, ”সুজাতা, তুমি আমার জন্য যা যা করেছো, আমি তা এতটুকুও ভুলিনি, ভুলবও না। আমি চাই, তুমি তোমার পথে রাজনীতি করো। কিন্তু আমার কথা না শুনে তুমি আজ তৃণমূলের সঙ্গে চলে গেলে! আজ থেকে তোমায় ‘খাঁ’ পদবি থেকে মুক্তি দিলাম। আমি বিবাহবিচ্ছেদের নোটিস পাঠাচ্ছি।” এরপর স্ত্রীর প্রতি চিরন্তন ভালবাসা থেকে সৌমিত্রর বক্তব্য, ”তৃণমূলের উদ্দেশে বলছি, আপনারা যেন ওকে খুন করে দেবেন না। ওর নিরাপত্তা নিয়ে আমি চিন্তিত। দয়া করে ওকে খারাপ কাজে ব্যবহার করবেন না।”
[আরও পডুন: ‘বিজেপির আসন দু’অঙ্ক ছাড়ালে আমি কাজ ছেড়ে দেব’, বাংলার ভোট নিয়ে মুখ খুলেই বিস্ফোরক পিকে]
হাতে হাত রেখেই ২০১৯সালে ঘাসফুল শিবির ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে গিয়েছিলেন সৌমিত্র, সুজাতা। আইনি জটিলতায় বিষ্ণুপুর কেন্দ্রে সৌমিত্রর প্রবেশে বাধা থাকায়, সুজাতা একাই তাঁর হয়ে প্রচার করে জিতিয়ে দিয়েছিলেন। তারপরও অনেক ঝড়ঝাপটা তাঁরা একসঙ্গে সামলেছেন। কিন্তু একুশের নির্বাচনের আগে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদানের পর অনেকটা নাটকীয়ভাবেই ‘ঘর ওয়াপসি’ হল সুজাতার। আর তাতেই দাম্পত্যে চিড় ধরল। সুজাতার সাংবাদিক বৈঠকের ঠিক পরপরই সৌমিত্র সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানালেন যে তিনি স্ত্রীকে বিবাহবিচ্ছেদের নোটিস পাঠাচ্ছেন। আজ থেকে তাঁর সহধর্মিনীর পরিচয় থেকে মুক্ত সুজাতা। সাংসদ এও জানালেন যে এবার থেকে বিজেপির জন্যই আরও বেশি করে কাজ করবেন। এদিকে, এ প্রসঙ্গে মুকুল রায় (Mukul Roy) বলেন, “এটা ওদের পারিবারিক ব্যাপার। কারো সঙ্গে কারোর স্ত্রীর ঝগড়া হয়েছে। স্ত্রী স্বামীকে ত্যাগ করে যেতেই পারেন। আবার ফিরতেও পারেন। এটা কোনও রাজনৈতিক বিষয় হতে পারে না।”