রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: একসময় বাংলায় বিজেপির জমি তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর। চোখা চোখা ভাষায় বিরোধীদের দিকে বাক্যবাণ ছুঁড়ে দিতেন তিনি। এহেন দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা দিলীপ ঘোষই এখন দলে 'ব্রাত্য'। ন্যাশনাল লাইব্রেরির অডিটোরিয়ামে বঙ্গ বিজেপির আদি নেতাদের পুনর্মিলন উৎসবে আমন্ত্রণ নিয়ে অভিমান আরও বেড়েছে। কারণ, এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য কোনও নেতা নন। সূত্রের খবর, কলসেন্টার থেকে নাকি আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তাঁকে।
২৫ ডিসেম্বর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত অটলবিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিন। দলের বসে যাওয়া, বাদ যাওয়া পুরনো নেতাদের নিয়ে এই পুনর্মিলন উৎসব। এই সভার আয়োজনের অন্যতম দায়িত্বে রয়েছেন বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সহ-সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁরা ২০২১ সালে দলের প্রার্থী ছিলেন, আগের রাজ্য কমিটির পদাধিকারী ছিলেন এবং প্রাক্তন জেলা সভাপতিদের ডাকা হয়েছে এই সভায়। কেন্দ্রীয় নেতা সুনীল বনসল, রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য ছিলেন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও আমন্ত্রণ করা হয়। এই পুনর্মিলন উৎসবের মধ্য দিয়ে মূলত বনসল ও শমীকের নির্দেশেই দলের পুরনো নেতাদের ছাব্বিশের ভোটের আগে সক্রিয় করে তোলার কাজ শুরু হল। অথচ রাজ্যস্তরের এই উৎসবেই নাকি সঠিকভাবে আমন্ত্রণই করা হয়নি দিলীপ ঘোষকে। তাঁকে কোনও নেতাই ফোন করেননি। ফোন গিয়েছিল কলসেন্টার থেকে। ওই ফোন পেয়ে অভিমান আরও বেড়েছে দিলীপ ঘোষের। তাই অনুষ্ঠানে যাননি তিনি। পরিবর্তে সিঙ্গুরে নিজের কর্মসূচিতে যোগ দেন দিলীপ।
বিজেপির ঘরোয়া কোন্দলের কথা কারও অজানা নয়। দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বঙ্গ বিজেপির সম্পর্কের অবনতির নেপথ্য কারণ গোষ্ঠীকোন্দল ছাড়া আর কিছুই নয়। গত লোকসভা নির্বাচনে খড়গপুরের পরিবর্তে বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের টিকিট পেয়েছিলেন দিলীপ। ভোট বিপর্যয়ের পর নিজে মুখেও দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা গিয়েছিল দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতাকে। একের পর এক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ নিয়ে টানাপোড়েনের নেপথ্য কারণও স্পষ্ট নয়। তবে দলের অন্দরে ফাটল যে ক্রমশ প্রকট হচ্ছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই রাজনৈতিক মহলের।
