সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: উন্নয়নের স্বার্থে একযোগে কাজের বার্তা। শিলিগুড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের বৈঠকে হাজির থেকে কার্যত রাজনৈতিক কর্তব্যের নজির রাখল উত্তরবঙ্গের বিজেপি (BJP) নেতৃত্ব। মঙ্গলবার উত্তরকন্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) বৈঠকে যোগ দিলেন মালদহ উত্তরের সাংসদ খগেন মুর্মু, মাদারিহাটের বিধায়ক তথা পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা। দুই আদিবাসী নেতার কাছ থেকে মুখ্যমন্ত্রী সেখানকার আদিবাসীদের পরিস্থিতি জানতে চান। তাঁদের জন্য প্রকল্পগুলির অগ্রগতিও সম্পর্কেও বিশদে তথ্য নেন। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, এই বৈঠকে যোগ দিয়ে বিরোধী নেতৃত্ব বোঝাল, কাজের স্বার্থে রাজনৈতিক দূরত্বও মুছে ফেলা সম্ভব।
সোমবার উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওইদিনই ‘অশোক মডেলে’ ধস নামিয়ে বড় ব্যবধানে শিলিগুড়ি (Siliguri) পুরনিগম জয়ের পর তিনি ভাবী মেয়র গৌতম দেবকে নতুন শিলিগুড়ি গঠনের বার্তা দিয়েছেন। এরপর মঙ্গলবার উত্তরকন্যায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। এই পরিষদের সদস্য আদিবাসী জনপ্রতিনিধি – সাংসদ খগেন মুর্মু (Khagen Murmu), বিধায়ক মনোজ টিগ্গাও (Manoj Tigga)। তাই তাঁদের পরামর্শ নিতে বৈঠকে তাঁদের যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সম্মান বজায় রেখে বৈঠকে যোগ দেন দু’জনই। বৈঠকে ছিলেন পরিষদের অন্যান্য সদস্যরাও। সূত্রের খবর, ঘণ্টাখানেকের বৈঠকে আদিবাসীদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পে কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
[আরও পড়ুন: যুদ্ধের দামামা ইউক্রেনে, ভারতীয়দের দ্রুত কিয়েভ ছাড়ার পরামর্শ দূতাবাসের]
বিজেপির জনপ্রতিনিধিদের এই বৈঠকে যোগদানে আশার আলো দেখছে রাজনৈতিক মহল। তাদের মত, এভাবেই যদি রাজনৈতিক বিরোধিতা সরিয়ে উন্নয়নের স্বার্থে সকলে হাতে হাত ধরে কাজে এগিয়ে আসেন, তাহলে উন্নয়নের পথই মসৃণ হবে। এতদিন বিরোধীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তাঁরা সরকারের ডাকা কোনও আলোচনায় হাজির হন না। বিশেষত বিধানসভায় বিরোধীদের লাগাতার অনুপস্থিতি সেই সমালোচনা আরও বাড়িয়ে তোলে। কিন্তু এদিন খগেন মুর্মু, দশরথ তিরকেরা অন্য নজির রাখলেন।
[আরও পড়ুন: কোটি টাকা মুক্তিপণ চাওয়ার পর খুন! কলকাতার গেস্ট হাউস থেকে উদ্ধার স্বর্ণ ব্যবসায়ীর দেহ]
বৈঠক সেরে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, ”ভাল আলোচনা হয়েছে। আদিবাসীদের উন্নয়নে আমরা অনেক কাজ করেছি। আজও অনেক পরামর্শ দিলেন পরিষদের সদস্যরা। আমরা বছরে দু’বার করে বৈঠক করব। আজ একটা হয়ে গেল। আগামী বৈঠকের আগে আজকের এই পরামর্শগুলো নিয়ে আমরা কাজ করব।” পাশাপাশি তিনি আরও জানান, এপ্রিলে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আগে উত্তরবঙ্গে শিল্প বৈঠকের পরিকল্পনা রয়েছে।
এদিন বৈঠকের আগে শিলিগুড়ির নবনির্বাচিত কাউন্সিলরদের সঙ্গে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী। নতুন শিলিগুড়ি কেমন হবে, সে সম্পর্কে নিজের পরিকল্পনার কথা শেয়ার করেন তাঁদের সঙ্গে। বারবার কলকাতার কথা উল্লেখ করে শিলিগুড়িকেও সেভাবে সাজানোর কথা বলেন। তাঁদের সঙ্গে ফটো সেশনেও যোগ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।