চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: বছরের শেষদিন পর্যন্ত আসানসোলের (Asansol) বারাবনির গৌরাণ্ডি হাটতলায় দাঁড়িয়ে ছিল বিজেপির পার্টি অফিস। আর নতুন বছরের প্রথম দিনই তা উধাও! কংক্রিটের তৈরি বিজেপি কার্যালয়টি একেবারে ধুলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। কেউ বা কারা বুলডোজার চালিয়ে তা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনায় যথারীতি গেরুয়া শিবিরের নিশানায় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের পালটা দাবি, ওই পার্টি অফিসটি বেআইনিভাবে জমি দখল করে তৈরি হয়েছিল বলে অভিযোগ পেয়েছিলেন তাঁরা। হয়ত তাই প্রশাসনই অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলেছে। নেপথ্যে যারাই থাকুক, এভাবে রাতারাতি দলীয় কার্যালয় গুঁড়িয়ে যাওয়ায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বারাবনির রাজনৈতিক পরিস্থিতি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে বিজেপির (BJP) এই দলীয় কার্যালয়টি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেসময় মুকুল রায়, সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় গৌরাণ্ডিতে গিয়ে দলীয় কার্যালয়টি পুনরুদ্ধার করে দলীয় পতাকা উত্তোলন করে এসেছিলেন। সেই পতাকার নিচে ছিল অফিসটি। রোজ দলীয় কর্মীরা সেখানে জমায়েত হতেন, চলত আলোচনা, কাজকর্ম। তবে পার্টি অফিসের আড়ালে এখানে সমাজবিরোধী কার্যকলাপের ঘাঁটি তৈরি হচ্ছিল বলে থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলেও তাঁদের অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: কোয়ারেন্টাইনে না থেকে ডুয়ার্স ভ্রমণে ব্রিটেনফেরত ৮ জন, দায়িত্ববোধ নিয়ে উঠছে প্রশ্ন]
কিন্তু বছর না ঘুরতেই সেই কার্যালয়টিকে ধুলিসাৎ করে দেওয়া হল। রাতের অন্ধকারে দরজা জানালা খুলে জেসিবি মেশিন চালিয়ে দেওয়া হয়। বিজেপি যুব মোর্চার জেলা সভাপতি তথা বারাবনির বিজেপি নেতা অরিজিৎ রায়ের অভিযোগ, ”রাজ্যজুড়েই এরকম অরাজকতা চলছে। বারাবনি তার বাইরে নয়। এর আগেও এই দলীয় কার্যালয়টি ভাঙা হয়েছিল। ফের ব্লক তৃণমূল সভাপতি অসিত সিং এর ইন্ধনে কার্যালয়টি ভাঙা হল।” অরিজিতের আরও অভিযোগ, অসিত সিং এর ভাই পানুরিয়া পঞ্চায়েত প্রধান বিশ্বজিৎ সিং দাঁড়িয়ে থেকে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে, বুলডোজার চালিয়ে পার্টি অফিসটি ভাঙচুর করেছে।
[আরও পড়ুন: এবার ‘বেসুরো’ দিব্যেন্দু অধিকারী, কাঁথির নতুন প্রশাসক নিয়োগ ‘অবৈধ’ বলে তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ]
বারাবনি ব্লক তৃণমূল (TMC) সভাপতি অসিত সিং এর দাবি, ”ওই বিজেপির দলীয় কার্যালয় তৃণমূল ভাঙেনি। তবে শুনেছি ওই পার্টি অফিসটি পিডবলুডির জমি দখল করে করা হয়েছিল। ওখানে দরজা জানালাও ছিল না। নেশাখোরদের আড্ডা হচ্ছিল রাত পর্যন্ত। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছিলেন গৌরাণ্ডি হাটতলাবাসী। দুস্কৃতীদের আখড়া হওয়ায় হয়তো স্থানীয়রাই ভেঙে ফেলেছে।” তবে বারাবনি ব্লক অফিস সূত্রে খবর এরকম কোনও অপারেশন প্রশাসন বা পঞ্চায়েত থেকে করা হয়নি।