অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: রাজ্যে সরকার ভেঙে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। শনিবার দিওয়ালির সকালে খড়গপুর গ্ৰামীণ থানার জফলা এলাকায় একটি কর্মসূচিতে যোগ দেন তিনি। সেই কর্মসূচির মঞ্চ থেকে রাজ্য সরকার তথা তৃণমূলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনেন। অন্যদিকে, বিজেপি রাজ্য সভাপতির কালীপুজোর উদ্বোধনের সভাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় নারায়ণগড়ের ৭ নং কাশিপুর অঞ্চলের আমডিহা গ্রাম। অভিযোগ, তৃণমূল কর্মীদের হামলায় জখম হয়েছেন বিজেপি কর্মীরা।
এদিনের দলীয় কর্মসূচির মঞ্চ থেকে দিলীপ ঘোষের হুঁশিয়ারি, “আজ কাঁচ ভাঙলে কালকে কাঁচ লাগিয়ে নেওয়া যাবে। কিন্তু সরকার ভেঙে দিলে কোথায় যাবে? অনাথ হয়ে যেতে হবে।” উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে উত্তরবঙ্গে এক সভায় যোগ দেওয়ার আগে তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। গাড়ির কাঁচও ভেঙে দেওয়া হয়েছিল।
[আরও পড়ুন : মুছে যাক ধর্মীয় ভেদাভেদ, সম্প্রীতির বার্তা দিতে কালীমন্দিরে আলপনা এঁকে তাক লাগালেন নাসির]
এদিন খড়গপুরে দিলীপ ঘোষ বলেন, “রাজ্যে লুটপাট ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিজেপি লড়াই করছে। রাজ্যের পুলিশ মামলা দিচ্ছে। তারপরেও পারছে না। ইট মারছে। পাথর ছুঁড়ছে। গাড়ি ভেঙে দিচ্ছে।” এরপরই সরকার ভেঙে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি। পাশাপাশি, তৃণমূলের বিরুদ্ধে সিপিএমকে অক্সিজেন জোগানোরও অভিযোগও আনেন তিনি। বিজেপির রাজ্য সভাপতির কথায়, “স্যালাইন ও কোরামিন দিয়ে সিপিএমকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। সিপিএমের বন্ধ হয়ে যাওয়া পুরনো অফিস খুলে বসানোর ব্যবস্থা করে দিচ্ছে তৃণমূল। এমনকি ঝাঁট দিয়ে দিচ্ছে। চা খাওয়ার পয়সা দিচ্ছে।” তবে এসব করে কোনও লাভ হবে না বলে তিনি বলেছেন। দিলীপ ঘোষ বলেন, “বাংলার মানুষ যাদের রিজেক্ট করেছে তাঁদের প্রজেক্ট করে কোনও লাভ হবে না। মানুষ এবারে বিজেপিকে নিয়ে আসবে বলে ঠিক করে ফেলেছেন।”
দিলীপবাবুর আরও অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো টাকা সর্বত্র লুঠ করা হচ্ছে। উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন. “লুঠ করে যারা গায়ের ওজন বাড়িয়েছে, চেহারা চকচকে করেছে তাXদের বুঝিয়ে দিন লুঠের রাজত্ব শেষ হয়ে গিয়েছে। আর ৫/৬ মাস পরে রাজ্যে বিজেপির রাজত্ব হবে। তখন সব হিসেব করা হবে।” যারা দুর্নীতি করেছে, তাদের জেলে পাঠানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।
[আরও পড়ুন :পুলিশকে নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য, দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে জারি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা]
এদিকে মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষের কালীপুজা উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে অশান্তি ছড়ায়। তাঁর সভা উপলক্ষে আমডিহা গ্রামের বিজেপি কর্মীরা যখন দলীয় পতাকা লাগাচ্ছিলেন, ঠিক সেই সময়ে তৃনমূলের কর্মীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। পাঁচ বিজেপি কর্মী গুরুতর আহত হন। আহতদের প্রথমে বেলদা হাসপাতালে নিয়ে এলে সেখান থেকে তিনজনকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। এই হামলার পেছনে স্থানীয় তৃণমূলের অঞ্চল প্রধান রবীন ধাউড়িয়া ও তাঁর ভাই জড়িত বলে অভিযোগ করে বিজেপি। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।