সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিধানসভা নির্বাচন আগামী বছর। তার আগে ক্রমশই বাড়ছে শাসকদলের অন্দরে ভাঙনের সম্ভাবনা। তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই বাড়ছে তৃণমূলের অস্বস্তি। তবে শাসকদের অন্দরমহলের অস্বস্তিই ভোটের আগে অক্সিজেন জোগাচ্ছে বিরোধী বিজেপি শিবিরকে। এই প্রেক্ষাপটে দলে ভাঙনের প্রসঙ্গে কোচবিহারের কর্মিসভা থেকে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর অভিযোগ, সুব্রত বক্সি এবং অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mandal) গেরুয়া শিবিরের তরফে ফোন করে বৈঠকে বসার কথা বলা হয়। তাঁরা ওই বৈঠকে বসতে চাইছেন না বলেও জানান তিনি। ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রীর বিস্ফোরক অভিযোগ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা।
এছাড়াও এদিনের মঞ্চ থেকে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের কথাও তুলে ধরেন তিনি। ওই নির্বাচনে অবশ্য কোচবিহারকে নিজেদের দখলে রাখতে পারেনি তৃণমূল (TMC)। সেখানে ফুটেছিল পদ্মফুল। বিধানসভা নির্বাচনের আগে কোচবিহারের রাসবাড়ি মাঠের কর্মিসভায় সাংসদ নিশীথ প্রামাণিককের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহারে আমরা হেরেছি। কিন্তু যারা জিতেছে তারা গুন্ডামি করছে। আমরা যাকে তাড়িয়ে দিয়েছিলাম। তাকেই বিজেপি নিল।” বিজেপিকে কড়া ভাষায় বিঁধে তাঁর বার্তা, “অতিমারীর সময়ে ভিনরাজ্য থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। দিল্লির বিজেপি সরকারের মানবিকতা হল না ট্রেনের ভাড়া নেব না। ট্রেনের ভাড়া, খাওয়ার খরচ দিয়েছি আমরা। আর ওদের কাজ নেই কর্ম নেই। মিথ্যের ফুলঝুড়ি ছড়াচ্ছে।” বিজেপিকে মিথ্যের ডাস্টবিন বলেও কটাক্ষ তাঁর।
[আরও পড়ুন: ‘জোয়ারে আসে, ভাটায় চলে যায়, কিছু যায় আসে না’, নাম না করে শুভেন্দুকে তোপ মমতার]
কেন্দ্রের কৃষি আইনের বিরুদ্ধেও এদিন আরও একবার তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কটাক্ষ, “লঙ্কায় গিয়ে রাবণ হয়ে গিয়েছে। আলু, পিঁয়াজ পাবেন না। চাল কেড়ে নিয়ে চলে যাবে। ডাকাত এসে গিয়েছে। বর্গী এসেছে।” আরও একবার বহিরাগত ইস্যুতেও তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। আরএসএসকে বহিরাগত বলে আক্রমণ করেন। রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষকেও কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপিকে খোঁচার পাশাপাশি রাজ্যের উন্নয়নের খতিয়ানও তুলে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে (BJP) সরাসরি রাজনৈতিক যুদ্ধে নামার হুঁশিয়ারি দেন বাংলার প্রশাসনিক প্রধান। বাংলা রক্ষার জন্য রাজ্যবাসীকে এগিয়ে আসার আরজিও জানান তিনি। বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই শাসক-বিরোধী আক্রমণের ঝাঁজ যে বাড়ছে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।