স্টাফ রিপোর্টার: মানিকতলা বিধানসভার আসন্ন উপনির্বাচনে প্রার্থী কে? বিজেপিতে জোর শুরু হয়েছে ‘পহলে আপ’, ‘পহলে আপ’ বলে দায় ঠেলাঠেলি। চলতি রাজনৈতিক নিয়ম মেনে ভোটে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে নেতা-নেত্রীরা সবাই হয় নিজের বা ঘনিষ্ঠ নেতার নাম প্রার্থী হিসাবে সুপারিশ করেন। তবে ইতিমধ্যেই গুঞ্জন শুরু হয়েছে সজল ঘোষকে নিয়ে।
জানা গিয়েছে, মানিকতলা আসনে বিজেপি নেতারা যাঁকে দলের মধ্যে গোপনে বেশি ‘শত্রু’ মনে করেন তাঁদের নাম প্রার্থী হিসাবে শীর্ষমহলে সুপারিশ করছেন। বস্তুত এই কারণেই উত্তর কলকাতায় তৃণমূলের নিশ্চিত আসনে উপনির্বাচনে প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল, সজল ঘোষ, কল্যাণ চৌবে, অনুপম হাজরা থেকে শুরু করে তথাগত রায়ের নামও প্রার্থী হিসাবে উঠে এসেছে। উলটোদিকে তৃণমূলের তরফে পাণ্ডে পরিবারের কোনও একজন প্রার্থী হচ্ছেন বলে খবর। প্রয়াত সাধন পান্ডের স্ত্রী সুপ্তি পাণ্ডে দীর্ঘদিন ধরেই স্বামী যোগ্য সহকর্মী হিসাবে ঘরে-বাইরে দলের হয়ে কাজ করেছেন। অন্যদিকে মেয়ে শ্রেয়াও বাবা অসুস্থ হতেই ঝাঁপিয়ে পড়ে মানিকতলায় দল ও সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়িত করছেন। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
[আরও পড়ুন: ‘সেন্সর’ বিতর্কের মাঝেও স্বমেজাজে! ‘এখনও চিঠি পাইনি’, ফের দাবি দিলীপের]
প্রয়াত সাধন পাণ্ডের আসনে যে কোনওদিন উপনির্বাচন ঘোষণা করবে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। আসন্ন ভোটে গেরুয়া শিবিরের প্রার্থীর দৌড়ে এগিয়ে মধ্য কলকাতার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ (দেবু)। লড়াকু যুবনেতা হিসাবে পরিচিত সজল কিছুদিন আগে ভবানীপুর উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের চিফ ইলেকশন এজেন্টও ছিলেন। উপনির্বাচন পরিচালনায় অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাঁর। ২০২১ সালে দলে সজলকে নেওয়াই হয়েছিল চৌরঙ্গী বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করার প্রস্তাব দিয়ে। শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ এই পুরপিতার নানা কর্মসূচি নিয়ে চমক দিয়ে মিডিয়ার নজর কাড়ায় দক্ষতা আছে। মানিকতলায় দেবু পদ্মপ্রতীকে প্রার্থী হলে দল ভোট কতটা পাবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ থাকলেও টিভির পর্দায় বিজেপিকে পৌঁছে দেওয়া সহজ হবে। সূত্রে খবর, মুখে না বললেও মানিকতলা উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী হতে আপত্তিও নেই স্বয়ং সজলেরও।
রাজ্য বিজেপির একাংশ মানিকতলায় মহিলা প্রার্থী দাঁড় করানোর পক্ষে জোরালো যুক্তি দিচ্ছে। কারণ, সংঘ ঘনিষ্ঠ ওই নেতারা নিশ্চিত, সুপ্তি অথবা শ্রেয়া পাণ্ডেই তৃণমূলের প্রার্থী হচ্ছেন, তাই পদ্মপ্রতীকে মহিলাকে চাইছেন তাঁরা। সেক্ষেত্রে আট মাসের মধ্যে এন্টালি ও ভবানীপুরে দু’বার গোহারা প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের নাম প্রস্তাব করেছেন একাধিক রাজ্য নেতা। যদিও অন্য শিবিরের কটাক্ষ, মানিকতলায় প্রার্থী হলে একবছরে ভোটে হারার ক্ষেত্রে হ্যাটট্রিক করে গিনেস বুকে নাম তুলবেন প্রিয়াঙ্কা। উত্তর কলকাতার দলীয় কর্মীরা অবশ্য চাইছেন, জেলা বিজেপি সভাপতি কল্যাণ চৌবেই ফের ওই কেন্দ্রে প্রার্থী হন। ২০২১ সালের ভোটে সাধন পাণ্ডের কাছে ২০ হাজার ২৩৮ ভোটে হারা কল্যাণ কেন পার্টির এই দুর্দিনে পালিয়ে যাবেন? তাঁরই পদ্মপ্রতীকে লড়াই করা উচিত। বিজেপির হেডকোয়ার্টার সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরাও নাকি মানিকতলা উপনির্বাচনের হাত ধরে বাংলায় ফিরে আসতে চাইছেন। মঙ্গলবার রাজ্য বিজেপি অফিসে জোর চর্চা ছিল তথাগত রায়কে নিয়ে। দিলীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতা এদিন বলেন, “কথায় কথায় টুইট করা, পার্টি নেতাদের ‘কামিনী-কাঞ্চন যোগ’ নিয়ে প্রশ্ন তোলা তথাগত রায়ই মানিকতলায় একমাত্র ওজনদার প্রার্থী।”