অভিজিৎ ঘোষ, জয়সলমেঢ়: রাজস্থান বিজেপি (BJP) তিন কারণে চাঙ্গা। প্রথম কারণ, ভোটের ইতিহাস। কী সেই ইতিহাস? প্রতি পাঁচ বছরে রাজস্থানের (Rajasthan) গদি বদলানোর ইতিহাস। ১৯৯৮-তে অশোক গেহলট, ২০০৩-এ বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া, ২০০৮-এ ফের গেহলট, ২০১৩-এ বসুন্ধরা, ২০১৮-তে ফের গেহলট। সিঁড়ি ভাঙা অঙ্কের নিয়ম অনুযায়ী এবার বিজেপির টার্ন। জয়পুর, যোধপুর, উদয়পুর, টাঙাওয়ালা থেকে দোকানদার কিংবা টুরিস্ট গাইড, অধিকাংশই কিন্তু ঘুরেফিরে বলছেন ওই কথা, রাজস্থান পে তো হর পাঁচ সাল অন্তর সত্তা বদলতি হ্যায়। তো ইসবার তো বিজেপি কি-ই বারি হ্যায়… বিজেপির নেতা-কর্মীদের মধ্যেও দেখা গেল সেই সম্ভাবনার নিশ্চয়তা নিয়ে চওড়া হাসি।
দ্বিতীয় কারণ, বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব নিশ্চিত, বসুন্ধরা সরে যাওয়ায় বিজেপির আগের সরকারের নেতিবাচক ছাপ পড়বে না ভোটের উপর। ফলে বিজেপি অনেক মুক্তমনে ভোটে নেমেছে। তৃতীয় কারণ, একটি সমীক্ষা। বেসরকারি চ্যানেলের সমীক্ষা। গোটা বিজেপি টিম অর্থাৎ বিরোধী দলনেতা রাজেন্দ্র সিং রাঠোর, কিংবা মহাসচিব চন্দ্রশেখর প্রত্যেকেই ঘুরেফিরে সেই সমীক্ষার সুরে কথা বলছেন। সেই সমীক্ষায় বিজেপিকে ২০০ আসনের মধ্যে ১৩০-এর কাছাকাছি দিয়েছে। আর কংগ্রেসকে ৬০-এর মতো। যাকে বলে ধরাশায়ী সোনিয়ার দল। আর তাতেই বিজেপির অন্দরে মহানন্দ।
[আরও পড়ুন: দীর্ঘ সময় ধরে স্ত্রী সঙ্গমে রাজি না হলে তা মানসিক ক্রুরতার পরিচয়, পর্যবেক্ষণ হাই কোর্টের]
রাজস্থানে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে বাবা বালকনাথের নাম। কিন্তু কে এই বালকনাথ। ইনি বিজেপির আলওয়ারের সাংসদ। ২০১৯-এর ভোটে যোগী আদিত্যনাথ তাঁর হয়ে প্রচার চালিয়েছিলেন। সন্ন্যাসী। মস্তনাথ মঠের মহন্ত বালকনাথ আবার বিজেপির রাজস্থানের সহ-সভাপতি। নাথ সম্প্রদায়। রাজস্থানে প্রভাবও আছে। ইতিমধ্যে প্রচারেও বাবা বালকনাথ নেমে পড়েছেন। বিজেপির ধারণা, বাবার স্বচ্ছ ভাবমূর্তি আছে। উল্টোদিকে বসুন্ধরার ব্যক্তিগত চরিত্র নিয়ে নানা মুখরোচক চর্চা আছে। এবারের মহা টক্করে যা কংগ্রেস (Congress) ব্যবহার করতে পারে। তাই আগাম ব্যবস্থা। কিন্তু বসুন্ধরা কি অত সহজে দান ছেড়ে দেবেন? মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী থেকে তাঁকে যদি সরানোও হয়, তাহলে রাজঘরানার সিন্ধিয়া কি অন্যকেও শান্তিতে থাকতে দেবেন!
[আরও পড়ুন: ফের জ্বালানি জ্বালা, একলাফে অনেকটা বাড়ল বাণিজ্যিক গ্যাসের দাম]
যদি প্রার্থী হতে না পারেন তাই আগাম নিজের গোষ্ঠীর অন্তত ৯০-৯২ জনকে প্রার্থী করার দাবি জানিয়েছেন। তালিকাও গিয়েছে। আর তাতে মাথার চুল ছেঁড়ার জোগাড় দিল্লির নেতাদের। দাবি পূরণ না হলে বিজেপির কপালে ভোটের আগে আর পরে যে যথেষ্ট দুর্গতি আছে, তা নিশ্চিত জানেন মোদি-শাহ-সহ দিল্লির কর্তারা। তাই সিঁড়িভাঙা অঙ্ক আর সমীক্ষা দুইয়ের পরেও বিজেপির মনের মধ্যে চলছে নচিকেতার ওই গান, ভয় ভয় ভয়/ যদি ভোট নষ্ট হয়।