বিক্রম রায় ও চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়: এক বিজেপি কর্মীকে (BJP Worker) বেধড়ক মারধরের পর চোখ খুবলে নেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাতে নৃশংস এই ঘটনার সাক্ষী কোচবিহারের দিনহাটার নাজিরহাট। আহত ওই বিজেপি কর্মীকে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে প্রথমে ভরতি করা হয়। তবে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে কোচবিহারের হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
আক্রান্ত ওই বিজেপি কর্মীর নাম দীননাথ বর্মন। শুক্রবার দলীয় কার্যালয়ের সামনে আসেন তিনি। অভিযোগ, সেই সময় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা তাঁর উপর হামলা চালায়। বেধড়ক মারধর করা হয়। তারপর তাঁর চোখও খুবলে নেওয়া হয়। তারপরই হামলাকারীরা চম্পট দেয় বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় ওই বিজেপি কর্মীকে উদ্ধার করা হয়। দিনহাটা মহকুমা হাসপাতাল থেকে কোচবিহারে (Cooch Behar) স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই আপাতত চিকিৎসা চলছে তাঁর। দীননাথ বর্মন নামে আক্রান্ত ওই বিজেপি কর্মীর অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার করা না হলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের। যদিও হামলার অভিযোগ পুরোপুরি খারিজ করেছে শাসকদল তৃণমূল। দিনহাটা ২ নম্বর ব্লক সভাপতি বিষ্ণু কুমার সরকার বলেন, “এই ঘটনা বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই।”
[আরও পড়ুন: ‘২২০ টা আসন না পেলে রাজনীতি ছেড়ে দেব’, কেতুগ্রামের সভা থেকে চ্যালেঞ্জ অনুব্রতর]
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার থেকেই রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত কোচবিহারের বিভিন্ন প্রান্ত। ওইদিন জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদককে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। এরপর শুক্রবার দুপুরে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় মাথাভাঙা। বোমাবাজি, দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় রীতিমতো তুলকালাম পরিস্থিতি তৈরি হয়। কোচবিহারে বিজেপি জেলা সম্পাদকের উপর আক্রমণের প্রতিবাদে এদিন মাথাভাঙা থানা ঘেরাও কর্মসূচি ছিল বিজেপির। তাঁদের অভিযোগ, মিছিলে বোমাবাজি করে তৃণমূল (TMC)। উত্তেজিত বিজেপি কর্মীরাও ব্যাপক ভাঙচুর চালায় তৃণমূলের একটি দলীয় কার্যালয়ে। বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী জখম হন। বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই দিনহাটার নাজিরহাটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে উঠল বিজেপি কর্মীর চোখ খুবলে নেওয়ার অভিযোগ।
এদিকে, রাতের অন্ধকারে রানিগঞ্জের গির্জা পাড়া এলাকায় বল্লভপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান সিধান মণ্ডলের বাড়িতে আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠল বিজেপির দিকে। বাড়িতে রাখা খড়-সহ পুড়ে যায় দুটি স্করপিও এবং একটি বোলেরো গাড়ি। বাড়িটিতে কেউ না থাকায় প্রাণহাণির ঘটনা ঘটেনি। অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব।