সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: কৃষ্ণনগর লোকসভা নির্বাচনে হারের পর থেকেই টালমাটাল অবস্থা স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের। হারের পর দলের বিরুদ্ধেই তোপ দাগছেন বিজেপির প্রার্থী। এই আবহে শনিবার দুপুরে নদিয়া জেলা উত্তর সাংগঠনিক কার্যালয়ে তালা দিয়ে বিক্ষোভে শামিল বিজেপি কর্মীদের একাংশ। তাঁদের দাবি, রানিমার হারের পিছনে জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস ও সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তীর হাত রয়েছে। বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীদের আরও অভিযোগ, তৃণমূলের সঙ্গে আঁতাঁত করে রানিমাকে হারানো হয়েছে। দুজনকে তাঁদের পদ থেকে না সরালে এই বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।
ভোটের (2024 Lok Sabha Election) ফলাফল প্রকাশের পর কৃষ্ণনগরের গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী অমৃতা রায় অভিযোগ তোলেন, তাঁর হারের পিছনে দলের একাংশের হাত রয়েছে। এমনকী নির্বাচনের জন্য পাঠানো দলের টাকাতেও দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি অমৃতার। তাঁর আরও উপলব্ধি, অন্যের কথা শোনা ঠিক হয়নি। সেই মন্তব্যের রেশ কাটতে না কাটতেই শনিবার জেলা বিজেপির সদর দপ্তরে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ দেখায় কর্মীদের একাংশ।
[আরও পড়ুন: কামতাপুরি ভোট হাইজ্যাক! উত্তরের ৩ আসনে বিজেপির জয়ের নেপথ্যে কেএলও সুপ্রিমো?]
বিক্ষুব্ধ নেতা মিলন বিশ্বাস বলেন, "আমাদের জেলা সভাপতি ও সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক তৃণমূলের সঙ্গে আঁতাঁত করে রানিমাকে হারিয়েছেন। বসে যাওয়া কর্মীদের সঙ্গে ভোটের আগে কোনও আলোচনা করা হয়নি। এমনকী আমাদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। যার ফলেই রানিমার হার। আমরা এই জেলা সভাপতি ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অপসারণ চাই।" অপসারণ বা তাঁরা যদি পদত্যাগ না করেন, তাহলে এই বিক্ষোভ চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এখানেই প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি জেলা বিজেপির নেতারা চাননি রানিমা জিতুক? কারণ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে রানিমা বলেন, "ওরা যেমন বলেছে, তেমনই করেছি। সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রচার করেছি। যেখানে বলেছে, সেখানে গিয়েছি। এই পরাজয় মানতে পারছি না। আগামীতে রাজনীতি যদি করি, নিজের বুদ্ধিতেই চলব। অন্যের কথায় নয়।"
[আরও পড়ুন: যোগীর উপর বুলডোজার চালাতে তৈরি মোদি-শাহ! কোপে পড়তে পারেন শুভেন্দুও]
এই অভিযোগ উড়িয়ে নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা বিজেপি সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, "আজকে যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তাঁদের নির্বাচনের সময় দেখা যায়নি। বিজেপির কর্মী হলে একদিন হলেও প্রচারে দেখা যেত। কিষাণ মোর্চার সভাপতি মহাদেব সরকারের অনুপ্রেরণায় এই কাজ করানো হয়েছে। রানিমাকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। এটা একটা চক্রান্ত। রাজ্য নেতৃত্বকে এই বিষয়ে জানাব। যাতে আগামী দিনে কোনও বিজেপি কর্মী এই রকম করতে না পারে।"