নন্দন দত্ত, সিউড়ি: গরু, কয়লা পাচার এবং নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে সম্প্রতি গতি বাড়িয়েছে ইডি, সিবিআই। ইতিমধ্যেই সিবিআই গ্রেপ্তার করেছে অনুব্রত মণ্ডলকে। ইডি’র জালে ধরা পড়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সিবিআইয়ের নজরে রাজ্যের আইন মন্ত্রী মলয় ঘটক। এই পরিস্থিতিতে বুধবার রামপুরহাটের সভা থেকে আরও একবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
দিলীপ ঘোষ বলেন, “সিবিআই শুধু ডাকাডাকি করছে। ধরছে। কিন্তু সাজা কই? শুধু ধরলে হবে না, সাজা দিতে হবে। না হলে সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করবে কী করে?” বুধবার দিলীপ ঘোষের সঙ্গে একসময়ের জেলার পর্যবেক্ষক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশে দেখা যায়। বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনশল দলের পুরনো কর্মীদের দলে ফেরানোর বার্তা দেন। এমনকি নবান্ন অভিযানের পরে জেলায় জেলায় সফরে যাওয়ার কথাও ঘোষণা করেন। তার আগেই রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বীরভূম সফরে দিলীপ ঘোষ।
[আরও পড়ুন: বাগুইআটিতে নিহত দুই ছাত্রের বাড়িতে সুজিত বসু, বাধার মুখে সেলিম-সুজনরা]
বুধবার প্রাত:ভ্রমণে তারাপীঠের পূর্বসাগরে চা-চক্রে অংশ নেন দিলীপ ঘোষ। বীরভূমে এসে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেপ্তারি নিয়ে সরব হন দিলীপ ঘোষ। রামপুরহাটে হাজার চারেক কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে রামপুরহাটে মিছিল করে বিজেপি। সঙ্গে ছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ জেলা নেতৃত্ব। মিছিলে নকল জেল তৈরি করে তাতে মুখোশ পরিয়ে জেলবন্দি হিসাবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অনুব্রত মণ্ডলকে দেখানো হয়। নিশ্চিন্তপুর থেকে মিছিল বেরোয়। মহাজনপট্টি হয়ে পাঁচমাথার মোড়ে পথসভার আয়োজন করা হয়।
পরে দিলীপবাবু দাবি করেন, “সিবিআইয়ের ভয়ে লুকিয়ে বেড়াচ্ছেন মন্ত্রীরা। এলাকা ছাড়া হচ্ছেন নেতারা। তাহলে সরকারটা চলাবে কে?” ডিসেম্বরের মধ্যে সরকার ভেঙে যাবে বলেও দাবি তাঁর। এছাড়াও দিলীপ ঘোষের দাবি, “শুধু মন্ত্রী-বিধায়কদের নয়, সেই সময় যে জেলাশাসক কিংবা পুলিশ সুপাররা ছিলেন তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত সিবিআইয়ের।”
পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, “গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমাদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেওয়া হয়নি। অনুব্রত মণ্ডলের উন্নয়ন বাহিনী বোমাগুলি নিয়ে আমাদের মনোনয়নে বাধা দিয়েছিল। এবার অনুব্রত জেলে। দেখব কার কত কবজির জোর।” বাগুইআটির ছাত্র খুনের ঘটনা প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর দাবি, “রাজ্যের কোথাও সিসিটিভি চলে না। সব নাটক। মৃতের পরিবারের সঙ্গে দলীয় রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। প্রতিবাদ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সকলের গলা টিপে ধরা হচ্ছে।”