অভিরূপ দাস: ব্লাড গ্রুপ ছিল O পজিটিভ। হাসপাতালে ভরতি হওয়ার পর রোগীর রক্ত প্রয়োজন সেখান থেকে দেওয়া হল A পজিটিভ গ্রুপের রক্ত। মারাত্মক এই অভিযোগ কলকাতার রাজা অপূর্বকৃষ্ণ লেনের বিখ্যাত বিনায়ক হাসপাতালের বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন (Health Commission)। এই কমিটিতে রয়েছেন ডা. প্রসুন ভট্টাচার্য। তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরেই কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে, হাসপাতালের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘুঘুডাঙার বাসিন্দা বছর চৌষট্টির মিতালি ভৌমিক। শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে ভরতি হয়েছিলেন বিনায়ক হাসপাতালে। তাঁর রক্তাল্পতার সমস্যা ছিল। মিতালিদেবীর পরিবারের পক্ষ থেকে পৌলমী ভৌমিক রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনে অভিযোগ করেছেন, মিতালিদেবীকে ভুল গ্রুপের রক্ত দিয়েছে বিনায়ক হাসপাতাল। আপাতত মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন মিতালিদেবী। গোটা ঘটনায় হাসপাতালের বক্তব্য শুনতে কর্তৃপক্ষকে ডেকে পাঠায় স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন। কর্তৃপক্ষ স্বীকারও করে নেয়, সত্যিই তারা ভুল গ্রুপের রক্ত দিয়েছে। যদিও সমস্ত দোষ হাসপাতালের ল্যাবরেটরির ঘাড়ে চাপিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
[আরও পড়ুন: আলু–পিঁয়াজের কালোবাজারি রুখতে শহরের একাধিক বাজারে অভিযান কলকাতা পুলিশের]
কমিশন চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মিতালিদেবী এখন জীবনমরণ লড়াই চালাচ্ছেন। তাঁর পরিবারের তরফে অভিযোগ জানানো হয়েছে যে, ওই হাসপাতালে তাঁর শরীরে O পজিটিভ গ্রুপের রক্তের বদলে A পজিটিভ গ্রুপের রক্ত দিয়ে দেওয়া হয়। যার ফলে তাঁর দেহে মাল্টিপল অর্গ্যান ফেলিওর হওয়ার দশা। তাঁর অবস্থা এখন অত্যন্ত সংকটজনক।
[আরও পড়ুন: ‘মিথ্যার ঝুড়ি নিয়ে রাজ্যে এসেছেন’,অমিত শাহর সফর নিয়ে তীব্র কটাক্ষ তৃণমূলের]
রোগীকে ভুল গ্রুপের রক্ত দিলে তাঁর কী ক্ষতি হতে পারে? শহরের হেমাটোলজির চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ‘‘শরীরে ভুল গ্রুপের রক্ত গেলে কোষ ধ্বংস হতে পারে। বেশি প্রতিক্রিয়া হলে কিডনি, ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। অন্য গ্রুপের রক্ত রোগীর শরীরে কতটা এবং কতক্ষণ ধরে দেওয়া হয়েছে, তার উপরে অনেক কিছু নির্ভর করে।’’ এই প্রথম নয় এর আগেও শহরের এক হাসপাতালে এক রোগিণীকে ভুল গ্রুপের রক্ত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু তারপরও পরিস্থিতির বদল হয়নি, বিভিন্ন হাসপাতালের অসতর্কতার নিদর্শন মিলছে বারবারই।