স্টাফ রিপোর্টার: ২০০৮ সাল এক ইউনিট রক্তের দাম ছিল ৮৫০ টাকা। ২০১৪ সালে তা বেড়ে হয় ১৪০০ টাকা। আর ঠিক ৮ বছরের মাথায় আরও ১০০ টাকা বাড়তে চলেছে রক্তের দাম। প্রস্তাব পাঠিয়েছে ন্যাশনাল ব্লাড ট্রান্সফিউশন কাউন্সিল। পশ্চিমবঙ্গ-সহ সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে চিঠি পাঠিয়েছে কাউন্সিল।
কাউন্সিলের বক্তব্য, ৮ বছরে পেট্রোপণ্যের দাম আড়াই গুণ বেড়েছে। রক্ত এবং রক্তজাত সামগ্রী যে প্যাকেটে রাখা হয় তা পেট্রোলিয়ামজাত পিভিসি দিয়ে তৈরি। এছাড়াও পরিবহণ খরচ সার্জ চার্জ এবং সংরক্ষণের জন্য খরচ থাকে। রক্ত থেকে বিভিন্ন উপাদান আলাদা করতেও যথেষ্ট খরচসাপেক্ষ। তাই সব রাজ্যগুলির কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
[আরও পড়ুন: প্রাইমারি টেট দুর্নীতি: সিঙ্গল বেঞ্চের CBI তদন্তের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে রাজ্য]
পশ্চিমবঙ্গের স্টেট ব্লাড সেলের নোডাল অফিসার ডা. নিতাইচন্দ্র মণ্ডলের কথায়, আপাতত প্রস্তাব বলে মনে হলেও আগামী দিনে তা বাধ্যতামূলক হতে পারে। এর ফলে সরকারি ব্লাডব্যাংকের তেমন চাপ না পড়লেও বেসরকারি ব্লাডব্যাংকগুলিতে প্রভাব পড়বে। মেডিক্যাল কলেজের হেমাটোলজি অ্যান্ড ব্লাড ট্রান্সফিউশনের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. প্রসূন ভট্টাচার্যের কথায়, “রক্ত ও রক্তজাত দ্রব্যের দাম যদি বাড়াতেই হয় তবে ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল কাউন্সিলের মাধ্যমেই করা উচিত। কিন্তু এক্ষেত্রে তা করা হয়নি।” তাঁর ব্যক্তিগত অভিমত, এর প্রভাব পড়বে সরকারি এবং বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই। তবে কোন সরকার কীভাবে বিষয়টিকে পর্যালোচনা করবে তার উপর নির্ভর করবে।
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর, বর্তমানে এক ইউনিট রক্তের দাম ১৪০০ টাকা। তার সঙ্গে অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ আছে। যেমন- রক্তের উপাদান সংরক্ষণ করা, পৃথক করা, ব্লাড ট্রান্সফিউশ করা এবং বিভিন্ন উপাদান পরীক্ষা করতেও খরচ আছে। নতুন নিয়ম চালু হলে এক ইউনিট রক্তের দাম ২ হাজার টাকায় পৌঁছতে পারে। তবে স্বাস্থ্যদপ্তরের একাংশের অভিমত, ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্য ন্যাশনাল ব্লাড ট্রান্সফিউশন কাউন্সিলের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে। আম-আদমির স্বার্থের দিকে তাকিয়ে রক্তের দামের ভারসাম্য যাতে বজায় থাকে সেটাই মূল উদ্দেশ্য।
[আরও পড়ুন: কলকাতায় বেড়াতে এসে বন্ধুর ফ্ল্যাটে রহস্যমৃত্যু ভিনরাজ্যের যুগলের, কারণ ঘিরে ধন্দ]
স্বাস্থ্যদপ্তরের একাংশের অভিমত, এমনিতেই গোটা দেশে চাহিদার তুলনায় রক্তের জোগান অত্যন্ত কম। এর ফলে পেশাদার রক্তদাতার বাড়বাড়ন্ত হবে। বিরল গ্রুপের রক্তের তীব্র চাহিদা বাড়বে। তবে বেসরকারি ব্লাড ব্যাংকগুলি বেকায়দায় পড়তে পারে। ফার্মাসিউটিক্যাল অ্যাক্ট অনুযায়ী, বেসরকারি ব্লাড ব্যাংকগুলি রক্ত ও রক্তজাত দ্রব্যের গুণগতমানের সঙ্গে সমঝোতা করলে ক্ষতি হবে রোগীর। তাই রক্তের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত।