shono
Advertisement

‘সব অভিযোগ মিথ্যা’, হাসিনার পাশে দাঁড়িয়ে বিএনপিকে তোপ রাশিয়ার

এই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে তোপ দেগেছে আমেরিকা।
Posted: 02:48 PM Feb 02, 2024Updated: 04:21 PM Feb 03, 2024

সুকুমার সরকার, ঢাকা: ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয় গণতন্ত্রের বৃহত্তম উৎসব। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিপুল জনমত নিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছেন আওয়ামি লিগের প্রধান শেখ হাসিনা। কিন্তু এই ভোটপ্রক্রিয়া রুখতে নির্বাচনের আগে গোটা দেশজুড়ে অবরোধ-হরতাল চালিয়ে গিয়েছে প্রধান বিরোধীদল বিএনপি। এই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে তোপ দেগেছে আমেরিকা। কিন্তু হাসিনা সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত, চিন আর রাশিয়া। যা নিয়ে ফের ক্ষোভ উগরে দিয়েছে খালেদা জিয়ার দল। কিন্তু বিএনপির সব অভিযোগ ‘বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা’ বলে নস্যাৎ করে দিয়েছে মস্কো।

Advertisement

জানা গিয়েছে, গত শনিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় হাসিনার সরকারকে তোপ দাগেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানো দেশগুলোর বিরুদ্ধেও ক্ষোভ দিয়ে তিনি বলেন, “শেখ হাসিনার সরকার, ভারত, চিন আর রাশিয়ার সরকার। এটা বাংলাদেশের জনগণের সরকার নয়।” পাশাপাশি বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মস্কোর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয় বিএনপির পক্ষ থেকে। এই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মন্টিটস্কি দাবি করেন, বিএনপির অভিযোগ বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা।

বুধবার বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী হাসান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত। আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের মুখমুখী হন তিনি। তখন তাঁকে বিএনপির অভিযোগ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে, উত্তরে মন্টিটস্কি বলেন, “নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ তাদের সরকারকে নির্বাচিত করেছেন। কর্মকর্তারা বলেছেন, ৪১.৮০ শতাংশ মানুষ এবার ভোট দিয়েছেন। যাঁরা অধিকাংশই ভোট দিয়েছেন আওয়ামি লিগকে। এখানে রাশিয়া কী করবে? আমরা কোনও দেশের রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করি না। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো বন্ধুদেশে। এটা এক ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য যা মিথ্যা। এগুলো বিশ্বাস করবেন না।”

[আরও পড়ুন: ভারতকে বন্দর ব্যবহারের অনুমতি বাংলাদেশের, ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত হাসিনা সরকারের]

আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার সম্পর্কে কী ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে জানতে চাইলে মন্টিটস্কি বলেন, “আমেরিকা বা পশ্চিমা দেশের কোনও নিষেধাজ্ঞাকে রাশিয়া আমল দেয় না। অবশ্যই নিষেধাজ্ঞা একটি সমস্যা। এর ফলে শুধু বাংলাদেশ বা রাশিয়া নয়, অনেক পশ্চিমা দেশও সমস্যায় পড়েছে।” বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে জানিয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, রাজনীতি, অর্থনীতি, কারিগরি ও বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গত বছর দুই দেশের বাণিজ্য ২৩০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। আমরা তিনটি ক্ষেত্রে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার বিষয়ে আলোচনা করেছি। বাংলাদেশ থেকে শুধু পোশাক নয়, পাট ও চামড়াজাত পণ্য নিতে আগ্রহী রাশিয়া। এছাড়া কৃষিপণ্যও নিতে আগ্রহী আমরা। দুই দেশের ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে রাশিয়ার ব্যাঙ্কের শাখা খোলার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ সময় অনুযায়ী সম্পন্ন হচ্ছে। রাশিয়া আশা করে, বাংলাদেশের সঙ্গে এধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। রাশিয়া বাংলাদেশকে এলএনজি, তেল ও তেলজাত পণ্য সরবরাহ করতে প্রস্তুত।”

আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার সম্পর্কে কী ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে জানতে চাইলে মন্টিটস্কি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিমা দেশের কোনো নিষেধাজ্ঞাকে রাশিয়া আমলে নেয় না। অবশ্যই নিষেধাজ্ঞা একটি সমস্যা। এর ফলে শুধু বাংলাদেশ বা রাশিয়া নয়, অনেক পশ্চিমা দেশও সমস্যায় পড়েছে। এদিন বৈঠকের পর বিদেশমন্ত্রী মাহমুদ বলেন, “দুদেশের ‘বাণিজ্য ঝুড়ি’আরও সম্প্রসারিত করার বিষয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। দুদেশের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি-সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক শিগগিরই সইয়ের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।” ফলে আগামিদিনে বাংলাদেশের সঙ্গেও রাশিয়ার সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে মত বিশ্লেষকদের।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement