সুকুমার সরকার, ঢাকা: ভারত মহাসাগরে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছে মাঝসমুদ্রে আটকে পড়েছে ১৮৫ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী। এমনটাই জানিয়েছে, রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার পরিষদ। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই মহিলা ও শিশু। তারা তীরে ফিরতে মরিয়া। রোহিঙ্গাদের এই দলটি বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির ছেড়ে অন্য দেশে যাওয়ার জন্য যাত্রা শুরু করেছিল। গত শনিবার জানিয়েছিল সংস্থাটি। কিন্তু গভীর সমুদ্রে তাদের নৌকার ইঞ্জিনটি বিকল হয়ে যায়। ইতিমধ্যেই নৌকার এক যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আরও বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
জানা গিয়েছে, সময়মতো উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে না নিয়ে গেলে আরও অনেকের প্রাণহানি ঘটতে পারে। সতর্ক করেছে ইউএনএইচসিআর। সংস্থাটির খবর, মায়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গা প্রতি বছর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভিন্ন দেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। বেশিরভাগ সময় তাদের গন্তব্য থাকে মালয়েশিয়া বা ইন্দোনেশিয়া। ইউএনএইচসিআরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে ২ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে সমুদ্রপথে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রার চেষ্টা করেছিল। গত বছর থেকে এই অঞ্চলে রোহিঙ্গা শরণার্থী-সহ ৫৭০ জনেরও বেশি মানুষের সমুদ্রে ডুবে মৃত্যু হয়েছে। বেশ কয়েকজনের নিখোঁজ হওয়ারও খবর পাওয়া গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ডেঙ্গুর করাল থাবা, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৪ জনের, হাসপাতালে ভর্তি আরও ২০৭]
বলে রাখা ভালো, সেনা অভিযানে মায়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার শরণার্থী শিবিরগুলোত আশ্রয় নিয়েছেন সাড়ে ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী। হিংসা, মানবপাচার এবং মাদক কারবারের কারণে ভয়ানক হয়ে উঠেছে সেখানকার পরিস্থিতি। সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সংঘর্ষ কেড়ে নিয়েছে অনেকের চোখের ঘুম। নিজেদের গোষ্ঠীর মানুষদের হাতেই প্রাণ হারাচ্ছেন তাঁরা। মায়ানমারে রোহিঙ্গারা ফিরে যেতে পারবে কি না সে বিষয়টি নিশ্চিত নয়। ক্যাম্পে ‘কোনও ভবিষ্যৎ না থাকায়’ অনেক রোহিঙ্গা এখন ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্রপথে পাড়ি দিয়ে মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলোতে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছে।