বাবুল হক, মালদহ: মনসা গানের আসর থেকে নাবালিকাকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠল মালদহে। বুধবার সকালে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এক ভুট্টাখেত থেকে কিশোরীর দেহ উদ্ধার হয়। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিন সকালে কুম্ভিরা পুলিশ ফাঁড়ির অদূরেই শুখাপাড়ার একটি ভুট্টাখেত থেকে কিশোরীর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সীমান্ত লাগোয়া বৈষ্ণবনগর থানার শোভাপুর-পারদেওনাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। মৃত কিশোরীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কিশোরী স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় নবম শ্রেণিতে পড়ত। শুখাপাড়ায় কয়েকদিন ধরে রাতে মনসা গান চলছিল। মঙ্গলবার রাতে মনসা গান শুনতে গিয়েছিল ওই কিশোরী। রাতে আর বাড়ি ফেরেনি সে। তবে অনেকেই গভীর রাত পর্যন্ত তাকে মনসা গানের আসরে দেখতে পেয়েছেন বলে পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে। এদিন সকালে ভুট্টার জমিতে তার দেহ পড়ে থাকতে দেখেন গ্রামবাসীরা। খবর পেয়ে বৈষ্ণবনগর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সরেজমিনে তদন্ত শুরু করে। গলায় শ্বাসরোধের চিহ্ন ছিল স্পষ্ট বলে জানিয়েছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: বৃহস্পতিবারই বারাণসীর ধাঁচে কলকাতায় শুরু গঙ্গা আরতি, সূচনা মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে]
মৃতার বাবা বলেন, “বুধবার সকাল থেকে রুপালীকে আমরা খোঁজাখুঁজি করছিলাম। আমাদের এক প্রতিবেশী সকাল বেলা ভুট্টার জমিতে সেচের জল দিতে গিয়ে ওর মৃতদেহ দেখতে পান। মনসার গান শুনে আমার মেয়ে বাড়িতে ফিরছিল। সেই সময় ওকে কয়েকজন জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে ভুট্টার খেতে ধর্ষণ করেছে। ধর্ষণ করার পর গলা টিপে মেরে ফেলা হয়েছে।” গয়ানাথবাবুর অভিযোগ, “শুখাপাড়ারই কয়েকজন যুবক এই অপকর্ম করেছে। আমার মেয়েকে যারা ধর্ষণ করে প্রমাণ লোপাট করার জন্য মেরে ফেলেছে, সেই অপরাধীদের শাস্তি চাই।” গ্রামবাসীদেরও সন্দেহ, ধর্ষণ করার পর প্রমাণ লোপাট করার জন্যই কিশোরীকে মেরে ফেলা হয়েছে।
শোভাপুর-পারদেওনাপুর অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি জালালউদ্দিন বলেন, “মেয়েটি গভীর রাত পর্যন্ত মনসা গান শুনছিল। অনেকেই গানের আসরে তাকে দেখেছেন। কিন্তু আজ সকালে ভুট্টার জমিটিতে গিয়ে দেখি, মেয়েটি মৃত। অর্ধনগ্ন অবস্থায় পড়ে আছে। হাই মাদ্রাসার নবম শ্রেণিতে পড়ত সে। খুব দুঃখজনক ঘটনা। এই ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাক না কেন, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।” মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, “ছাত্রীটির মোবাইল ফোনের কললিস্ট খতিয়ে দেখা হয়েছে। সন্দেহজনক কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে বলা যায়, এটি একটি খুনের ঘটনা। তবে ধর্ষণের বিষয়টি ময়নাতদন্তের পরেই স্পষ্ট হবে। তদন্ত চলছে।”