শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: বাড়ি থেকে নিখোঁজ হওয়ার ১২ ঘন্টা পর কিশোর-কিশোরীর ঝুলন্ত দেহ মিলল আমগাছে। মঙ্গলবারের এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের মালগাঁও পঞ্চায়েতের সাহেবঘাটা এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই স্কুল পড়ুয়ার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কাল রাতেও দুজনে হাত ধরে ঘুরেছিল। চা-ও খেয়েছিল একসঙ্গে। পারিবারিক অশান্তির জেরেই তাঁর চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে প্রাথমিক ধারনা পুলিশের।
এদিন সকালে সাহেবঘাটার পরিত্যক্ত সিনেমা হল এলাকার আমগাছে যুগলের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। গলায় ওড়নার ফাঁস দেওয়া ছিল। দেহ উদ্ধার করে প্রথমে কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। তার পর ময়নাতদন্তের জন্য জোড়া দেহ রায়গঞ্জ মেডিক্যাল হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। মৃতার পরিবার সূত্রে জানা যায়, মৃতা স্থানীয় জৈনগাঁও হাই স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী।সাহেবঘাটার পাহাড়গাঁও এলাকার বাসিন্দা। দুই পরিবারই কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। অন্যদিকে স্থানীয় রায়নগরের বাসিন্দা মৃত কিশোর। ঘটনাস্থল থেকে দুজনের বাড়ি অন্তত ৪ কিলোমিটার দূরে।
[আরও পড়ুন: জলের ড্রাম খুলতেই বেরিয়ে এল মহিলার পচাগলা দেহ, বাড়ি ভাড়া দিয়ে বিপাকে বাগুইআটির চিকিৎসক]
সোমবার রাত আটটা নাগাদ ওই দুজনকে এলাকার রাস্তায় ঘুরতে দেখেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। চায়ের দোকানে চা খেতেও দেখা গিয়েছিল। তার পর সকালে ভয়ঙ্কর পরিণতির দৃশ্য দেখে অনেকেই হতভম্ব হয়ে যান। এদিন রায়গঞ্জের মর্গে দাঁড়িয়ে মৃতা কিশোরী ছাত্রীর কাকা জানান, সোমবার দুপুর থেকেই নিখোঁজ ছিল কিশোরী। রাতভর বিভিন্ন এলাকায় খোঁজখবর চালিয়েও কোন হদিশ মেলেনি। অন্যদিকে বাড়ির অদূরে ছাত্রীর উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের সহকারী প্রধানশিক্ষক ব্যোমকেশ বর্মণ বলেন, “ভাবতেই পারছি না ছাত্রীর মৃত্যুর কথা। পড়াশোনা নিয়ে যথেষ্ট উৎসাহ ছিল। এভাবে মৃত্যু ভাবতেই পারছি না।”
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, প্রেম ভালোবাসার সম্পর্ক নিয়ে দুই পরিবারের অশান্তির জেরেই সম্ভবত এই ভয়ঙ্কর পরিণতি। এদিন কালিয়াগঞ্জ থানার আইসি সুবল ঘোষ বলেন,” কোনও পরিবারের তরফে কোন অভিযোগ এখনও জমা পড়েনি। তবে প্রাথমিকভাবে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।” প্রসঙ্গত, এপ্রিলের ২৪ তারিখ সকালে সাহেবঘাটার এক উচ্চমাধ্যমিক ছাত্রীর মৃতদেহ জলাশয় থেকে উদ্ধার ঘিরে রাজ্যজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। তাই এবার দেহ উদ্ধারের প্রথম থেকেই যথেষ্ট সর্তক ছিল কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ।