স্টাফ রিপোর্টার: শোকের সময় মন স্থির রাখা খুবই কঠিন। বিশেষ করে পরিবারের একমাত্র তরুণ সন্তান যখন অকালে জাগতিক জগতকে বিদায় জানায়। আচমকা প্রিয় মানুষটার চলে যাওয়া কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। কোনও যুক্তিই যেন এই দুঃখের ক্ষেত্রে খাটে না। ২৮ বছরের কৌস্তভের চলে যাওয়া মন থেকে মেনে নিতে পারেনি দক্ষিণ কলকাতার রায় পরিবারও। কিন্তু এই দুঃসময়ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। তরুণের মরণোত্তর অঙ্গদানে সম্মতি দিয়েছেন। রায় পরিবারের এই সিদ্ধান্তকে কুর্নিশ জানিয়েছেন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।
দক্ষিণ কলকাতার (South Kolkata) কসবার বাসিন্দা কৌস্তভ রায়। ২৮ বছরের যুবকের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছিল। ফেটে গিয়েছিল মাথার শিরা-উপশিরা। প্রথমে তাঁকে রুবি হাসপাতালে (Ruby General Hospital) ভরতি করা হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের আপ্রাণ চেষ্টা সত্ত্বেও কৌস্তবকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। ক্রমশ বন্ধ হয়ে যায় শরীরের বাকি অঙ্গের কাজ। এমন অবস্থায় রুবি হাসপাতালের চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নিয়ে জানান কৌস্তভের ব্রেন ডেথ হয়েছে। শোকে ভেঙ্গে পড়ে কৌস্তভের গোটা পরিবার। তবে দুঃখের এই সময়ও স্থিরচিত্তে সঠিক সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। ঠিক করেন মরণোত্তর অঙ্গদান হবে।
[আরও পড়ুন: বেলাগাম কোভিড চিকিৎসার বিল, স্বাস্থ্য কমিশনের কোপে রাজ্যের পাঁচ হাসপাতাল]
কৌস্তবের পরিবারের সিদ্ধান্তের পরই খবর দেওয়া হয় এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালে। এসএসকেএম ও রুবি হাসপাতালের চিকিৎসকরা পরিবারের সদস্যদের অনুমতি নিয়ে শুরু করেন অঙ্গ সংরক্ষণের কাজ। তরুণের ত্বক, হৃৎপিণ্ড এবং লিভার রিট্রিভ্যাল করা হয়। সোমবার বিকেলে সাড়ে তিনটে নাগাদ দুই হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল এই কাজ করেন। মৃত কৌস্তভ রায়ের ত্বক, লিভার এবং হার্ট সংগ্রহ করে গ্রিন করিডর করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে। সংরক্ষণ হয়েছে। আগামী দিনে মুমুর্ষ রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন হবে। তরুণের পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য, এভাবেই অন্যের মধ্যেই বেঁচে থাকবে তাঁদের কৌস্তভ। ভারাক্রান্ত হৃদয়ে যুবককে বিদায় জানিয়েছেন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও।